পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসে। তার পরে অন্ধকার হয়ে আসে— তারাগুলিতে আকাশ ছেয়ে যায়— দিনুর ঘর থেকে ছেলেদের গলা শুনতে পাই– তারা গান শেখে— তারপরে গন বন্ধ হয়ে যায়– তখন আদবিভাগের ছেলেদের ঘর থেকে হাৰ্ম্মোনিয়ম এবং বাঁশির শব্দের সঙ্গে সঙ্গে গানের ধ্বনি উঠতে থাকে। —ক্রমে রাত্রি আরো গভীর হয় তখন ছেলেদের ঘরের গানও বন্ধ হয়ে যায়, কেবল বিবিীর ডাক আর ব্যাঙের ডাক শোনা যায়— আর সমভ নিস্তব্ধ ; রামানন্দ বাবুদের ঘরের বারান্দা থেকে একটি লন্ঠনের আলো দেখা যায়, আর দূরে প্রামের রাস্তার ভিতর দিয়ে দুই একটা আলো চলচে দেখতে পাই। তারপরে সে আলোও থাকেনা— কেবলমাত্র আকাশ জোড় তারার আলে। তারপরে বসে থাকতে থাকতে ঘুম পেয়ে আসে তখন আস্তে আস্তে উঠে শুতে যাই। তারপরে কখন এক সময়ে আমার পূৰ্ব্বদিকের দরজার সমুখে আকাশের অন্ধকার অল্প অল্প ফিকে হয়ে আসে– দুটো একটা শালিখ পাখী উসখুস করে ওঠে, মেঘের গায়ে গায়ে সেনালি আভা ফুটে ওঠে, খানিক বাদেই সাড়ে চারটের সময় আদ্য বিভাগে ঢং ঢং করে ঘন্টা বাজতে থাকে— অমনি আমি উঠে পড়ি। মুখ ধুয়ে এসে আমার সেই পূৰ্ব্বদিকের বারান্দায় পাথরের চৌকির উপর আসন পেতে উপাসনায় বসি— সূর্য ধীরে ধীরে উঠে তার আলোকের স্পর্শে আমাকে আশীৰ্ব্বাদ করে। আজকাল সকাল সকাল খেতে যেতে হয়— কেননা মাঠে এক হই– একটি কেন গন হয়ে তারপরে আমাদের স্কুলের কাজ আরম্ভ হয়। ঠিক প্রথম ঘটায় আমার ক্লাস নেই। কিন্তু সেই সময়ে আমি আমার কোণটাতে এসে একবার পড়াবার বই ও খাতাপত্র দেখে শুনে ঠিক করে নিই— তারপরে আমার কাজ। এই আমার দিনরাতের হিসাব তোমার কাছে দিলুম। কেমন শাস্তিতে দিন চলে যায়। এই ছেলেদের কাজ করতে আমার খুব ভাল লাগে। কেননা ওরা জানেন যে, আমরা 8 ○