পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম ভাগ। তুমি কাঠগোদাম দিয়ে উপরে উঠেচ— পাঠানকোট সেই রকম কাঠগোদামের মত। সেখানকার ছোট ছোট পাহাড় গুলো, “কর, খল," “জল পড়ে, পাতা নড়ে", এর বেশি আর নয়। তার পরে ক্রমে ক্রমে যখন উপরে উঠতে লাগলুম তখন কেবল এই কথাই মনে হতে লাগল হিমালয় যত বড়ই হোক না, আমার কল্পনা তার চেয়ে তাকে অনেক দূরে ছড়িয়ে গিয়েছিল। মানুষের প্রত্যাশার কাছে হিমালয় পাহাড়ই বা লাগে কোথায় ? আসল কথা, পাহাড়টা থাকে থাকে উপরে উঠেচে মনের মধ্যে সয়ে আসে। যে জিনিসটা খুব বড় আমরা একেবারে তার সমভটা ত দেখতে পাই নে— পৰ্ব্বত ক্রমে ক্রমে দেখি, সমুদ্র ক্রমে ক্রমে দেখি– এমন কি, যে মানুষ আমার চেয়ে বয়সে অনেক বেশি তারও সেই বড় বয়সের সুদীর্ঘ বিত্তারটা একসঙ্গে দেখতে পাওয়া যায় না। এই জন্যে তফাৎ জিনিসটা কল্পনায় যত বড়, প্রত্যক্ষে তত বড় নয়। অর্থাৎ বড় হলেও বড় দেখায় না। সেইজন্যেই যে বড় তার সঙ্গে ছোটর মিল হওয়া অসম্ভব নয়। আমাদের যে ঠাকুরকে আমরা প্রণাম করি তিনি যত বড় তার সমন্ডটা যদি সম্পূর্ণ আমাদের সামনে আসত তাহলে সে আমরা সইতেই পারতুম না। কিন্তু হিমালয় পাহাড়ের মত আমরা তার বুকের উপর দিয়ে ক্রমে ক্রমে উঠি— যতই উঠি না কেন তিনি আমাদের একেবারে ছড়িয়ে যান না— বরাবর আমাদের সঙ্গী হয়ে আপনার মধ্যে তিনি আমাদের আপনি উঠিয়ে নিতে থাকেন; বুদ্ধিতে বুঝতে পারি তিনি আমাদের ছড়িয়ে আছেন— কিন্তু ব্যবহারে বরাবর তার সঙ্গে আমাদের সহজ আনাগোনা চলতে থাকে। তাই ত তাকে বন্ধু বলতে আমাদের কিছু ঠেকে না— তিনিও তার উপরের থেকে হেসে আমাদের বন্ধু বলেন, এত উপরে চড়ে যান না যে তার সঙ্গে কথা কওয়া দায় হয়ে ওঠে। তুমি যত জোরের সঙ্গে আমাকে সাতাশ বছরের করে নিয়েচ আমরা তার চেয়ে כ9\