পাতা:চিঠিপত্র (ঊনবিংশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটা চেষ্টা দেখি। শ্রীযুক্ত নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত মহাশয় এই শ্রেণীর লেখকদের অগ্রণী। Realistic নাম দিয়ে এগুলিকে সাহিত্যের একটা বিশিষ্ট অঙ্গ বলে চালাবার চেষ্টা হচ্ছে। দৃষ্টান্তস্বরূপ, নরেশবাবুর কয়েকখানি বই, “কল্লোলে প্রকাশিত বুদ্ধদেব বসুর রজনী হ’ল উতলা’ নামক একটি গল্প, যুবনাশ্ব’ লিখিত কয়েকটি গল্প, এই মাসের (ফাল্গুন) কল্লোলে প্রকাশিত বুদ্ধদেব বসুর কবিতাটি, ‘কালিকলমে নজরুল ইসলামের মাধবী প্ৰলাপ’ ও ‘অনামিকা’ নামক দুটি কবিতা ও অন্যান্য কয়েকটি লেখার উল্লেখ করা যেতে পারে। আপনি এসব লেখার দু’একটা পড়ে থাকবেন। আমরা কতকগুলি বিদুপাত্মক কবিতা ও নাটকের সাহায্যে “শনিবারের চিঠিতে ২ এর বিরুদ্ধে লিখেছিলাম। শ্রীযুক্ত অমল হোম মহাশয়ও এর বিরুদ্ধে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। কিন্তু এই প্রবল স্রোতের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ এত ক্ষীণ যে, কোনো প্রবলপক্ষের তরফ থেকে এর প্রতিবাদ বের হওয়ার একান্ত প্রয়োজন আছে। যিনি আজ পঞ্চাশ বছর ধ’রে বাংলা সাহিত্যকে রূপে রসে পুষ্ট করে আসছেন তার কাছেই আবেদন করা ছাড়া আমি অন্যপথ না দেখে আপনাকে আজ বিরক্ত করছি। । আমি জানি না, এই সব লেখা সম্বন্ধে আপনার মত কি। নরেশবাবুর কোন বইয়ের সমালোচনায় আপনি তার সাহসের প্রশংসা করেছেন। সেটা ব্যাজস্তুতি না সত্যিকার প্রশংসা, বুঝতে পারিনা। আমি নিজে এগুলিকে সাহিত্যের আগাছা ব’লে মনে করি। বাঙলা সাহিত্য যাথার্থ রূপ নেবার পূৰ্ব্বেই এই ধরণের লেখার মোহে পীড়ে নষ্ট হতে বসেছে, আমার এই ধারণা। সেইজন্যে আপনার মতামতের জন্যে আমি আপনাকে এই চিঠি দিচ্ছি। বিরুদ্ধে বা পক্ষে যে দিকেই আপনি মত দেন, আপনার মত সাধারণের জানা প্রয়োজন। 8 و \