পাতা:চিঠিপত্র (ঊনবিংশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আপনাকে আজ এই চিঠি লেখার একটি কারণ–(কাৰ্ত্তিকের) - ভারতীতে প্রকাশিত শ্রদ্ধেয় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের প্রবন্ধ “সাহিত্যে শুচিবিকার।” এই প্রবন্ধটিকে এই সম্প্রদায়ের লেখকগণ ইতিমধ্যেই নজির স্বরূপ দাখিল করেছেন। সেই প্রবন্ধটি আমি এই সঙ্গে পাঠাচ্ছি। আজ দশ বৎসর ধ’রে আপনার লেখা পড়ে আমার ধারণা হয়েছে আপনি সাহিত্যে শ্লীলতার গণ্ডী পার হয়ে যাওয়ার পক্ষে নন। আপনার লেখার এমন কোনো জায়গা আমি দেখিনি যেখানে আপনার চিত্রিত চরিত্র সংযম হারিয়েছে। ঠিক যতটুকু পর্যন্ত যাওয়া প্রয়োজন, ততটুকুর বেশী আপনি কখনও যাননি। অথচ যে-সব জিনিষ নিয়ে আপনি আলোচনা করেছেন সেই সব জিনিষই আধুনিক এই লেখকদের হাতে পড়লে কি রূপ ধারণ করত ভাবলে শিউরে উঠতে হয়। ‘একরাত্রি’, ‘নষ্টনীড়’ ও ‘ঘরে বাইরে এরা লিখলে কি ঘটত— ভাবতে সাহস হয় না। নবপর্যায় ‘বঙ্গদর্শনের প্রথম বর্ষের প্রথম সংখ্যায় সম্ভবত আপনি নিজে “সাহিত্য-প্রসঙ্গ’ লিখেছিলেন। পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের “উমা’ নামক উপন্যাসের সমালোচনায় তাতে লিখিত আছে —“সুনীতির হিসাবে এ গ্রন্থের প্রশংসা করিতে পারি না। বিনোদিনী ও যোগেশ্বর সম্বলিত যে চিত্র গ্রন্থকার আমাদিগকে দেখাইয়াছেন তাহা অস্বাভাবিক নহে– এমন অবস্থায় এমন ঘটনা পৃথিবীতে অনেক ঘটে। কিন্তু পৃথিবীতে যাহা কিছু ঘটে তাহাই যে কাব্যে অঙ্কিত করিতে হইবে এমন কোনো কথা নাই।.. কেবল কি পাপচিত্র আঁকিবার জন্যই পাপচিত্র আকা? তাই আবার পাঁচকড়িবাবুর ন্যায় ক্ষমতাশালী লেখকে করিয়াছেন। আমাদের দুর্ভাগ্য!... যাহাতে বিশ্বজনীন নীতি নাই, তাহা কি কাব্য হইতে পারে?” A) وال\