পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করেছে, নিৰ্ম্মমভাবে আমাকে অবমানিত করেছে, অসহ্য হয়েছে কতবার, নিঃশব্দে আমি তা সহ করে এসেছি, তবুও আজ পর্য্যন্ত বলতে পারলুমনা তোমাদের আমি চাইনে। আমি অত্যন্ত বেশি বাধা পড়ে গেছি, দুঃসহ দুঃখেও আমার নিস্কৃতি নেই। অথচ এও জানি সমাজের বাইরে একটা পারিবারিক দ্বীপের নিঃসঙ্গতার মধ্যে আমার জন্মদেশের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ছিলুম, সেই বিচ্ছেদের সমুদ্র পেরিয়ে দেশের শস্যক্ষেত থেকে আমি ফসল আনতে পারিনি, নিজের খাদ্য অামার নিজেকে একলা জন্মাতে হয়েছে, তার জাত আলাদা। দেশকে আমি যতই ভালোবাসিনে কেন, আনিবাৰ্য্য কারণে আমার মন তবু আপনাতে আপনি স্বতন্ত্র । সেইজন্যে এখানকার বাজারে সাহিত্যযাচনদার প্রবীণ মুরুবিব যখন আমার লেখার শ্রেণীনির্ণয় করতে বসে আমার অনেক সময়ে হাসি পায় । আমি যে জন্মব্রাত্য, শিশুকাল থেকেই আমি শ্রেণীভ্রষ্ট, এমনকি ব্রাহ্মসমাজও আমাকে খুটিতে বাধতে পারেনি। এইজন্তেই দেশের লোকের কাছ থেকে আমি প্রশংসা পেয়েছি প্রীতি পাইনি। কিন্তু বাধনের সৰ্ত্তে প্রীতি যদি না পেয়ে থাকি তবে তা নিয়ে খেদ করব না। -- এ কথা মনে রেখো যে দেশেই থাকো তোমার সার্থকতা আমি সৰ্ব্বান্তঃকরণে কামনা করি। ইতি ২৫ এপ্রেল ১৯৩৪ স্নেহানুরক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ծ o Ե