পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যারা বুদ্ধিমান তারা দুৰ্ব্বলের সহায়তাকেও উপেক্ষা করে না। বিগত যুদ্ধে সেই সহায়তা পেয়ে লর্ড চর্চহিলও কৃতজ্ঞের বদান্ততায় মুখর হয়ে উঠেছিলেন। আর কখনো যে সেই সহায়তার প্রয়োজন হবেনা তা বলা যায় না। কিন্তু কৃতজ্ঞতার স্মৃতি স্বল্পস্থায়ী, তার উপরে ভর দিয়ে আমাদের আবেদনের ভিত্তি পাকা করবার ব্যর্থ চেষ্টা দুৰ্ব্বলের পক্ষে বিড়ম্বন । যখন সামনে এতবড়ো তুর্ভেদ্য নিরুপায়তা দেখি তখনি বুঝতে পারি যে এই দুৰ্ব্বলের প্রতি নিৰ্ম্মম সভ্যতার ভিত্তি বদল না হলে ধনীর ভোজের টেবিল থেকে উপেক্ষায় নিক্ষিপ্ত রুটির টুকরো নিয়ে আমরা বাঁচব না। সভ্যতার বণিকবৃত্তি যতদিন না ঘুচবে ততদিন ভারতবর্ষকে ইংরেজ মহাজনের পণ্যদ্রব্য হয়ে থাকতেই হবে, কোনোমতেই তার অন্যথা হতে পারবে না। একপক্ষে লোভ যে রাষ্ট্রব্যবস্থার সারথি সেখানে অপরপক্ষে তুৰ্ব্বলকে বল্লাবদ্ধ বাহনদশা যাপন করতেই হবে । অবস্থাবিশেষে কখনো দানা বেশি জুট্‌বে কখনো কম। অসহিষ্ণু হয়ে যে-জীব হ্ষোধনি করবে পা-ছোড়াছুড়ি করবে তার স্পৰ্দ্ধা টিকবে না। সভ্যতার এই ভিত্তিবদলের প্রয়াস দেখেছিলুম রাশিয়ায় গিয়ে । মনে হয়েছিল নরমাংসজীবী রাষ্ট্ৰতন্ত্রের রুচির পরিবর্তন যদি এরা ঘটাতে পারে তবেই আমরা বঁচিব নইলে চোখরাঙানীর ভান করে অথবা দয়ার দোহাই পেড়ে দুৰ্ব্বল কখনোই মুক্তিলাভ করবে না। নানা ক্রটি সত্ত্বেও মানবের নবযুগের রূপ ঐ তপোভূমিতে দেখে আমি আনন্দিত ও আশান্বিত > 86t