পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘটনাবলীকে এমন করে গেথে তোলা যাতে সে আমাদের মনে যাথার্থিকের আবির্ভাব আনে। একেও খেলা বলচি এই জন্যে যে, বাস্তবের মধ্যে ঘটনাগুলির সুসংবদ্ধ বাছাই থাকেন, তাতে বহু অবাস্তরের মিশোল। সংহত সুসঙ্গত ঘটনাগ্রস্থনে যে নিবিড় যাথার্থ্যের রূপ জেগে ওঠে বাস্তবে তা নেই। নাটকে এই যে বাছাইকরা গাথুনির কাজ এও শিল্পীর কাজ। এই শিল্পজাত যাথার্থ্যের অনুভূতি যে নিছক সুন্দর হবেই তা নয়, তার বিশ্বাসযোগ্যতা স্বতই আমাদের বিস্ময়ের আনন্দ দেয়। কিন্তু তাই যথেষ্ট নয়, যথার্থ বড়ো নাটক আর যাই হোক সবটা নিয়ে কখনো অকিঞ্চিৎকর হতে পারে না— তার নিবিড়তা তার বৃহৎ সত্যদৃষ্টি তাকে তুচ্ছতা থেকে উদ্ধার করে । আমি যে চীনে কবিতার কথা বলছিলেম তা সামান্ত কিন্তু তুচ্ছ নয়, তার যাথার্থ নিরাভরণ সহজরূপেই প্রকাশ পেয়েছে। আধুনিক কবিদের অনেককে দেখি তারা স্পৰ্দ্ধার সঙ্গে তুচ্ছকে নিয়ে যেন বাহাইরির চেষ্টা করে— সামান্তকে সহজ আনন্দের স্পর্শমণির ছোওয়া দিয়ে অসামান্ত করে তোলবার প্রয়োজন স্বীকার করে না । তারা অলঙ্কারকে অবজ্ঞা করে কিন্তু এই অবজ্ঞাই তাদের অলঙ্কারদম্ভ । সহজজীবনকে সহজচোখে দেখার মতো সুন্দর কিছুই নেই, কিন্তু তাকে নিয়ে গায়েপড়া ওস্তাদীতে মন বিমুখ করে। মহেঞ্জোদারোর ভগ্নশেষের থেকে সব অবাস্তর বাদ পড়ে গেছে, তার ইঙ্গিতগুলির মধ্যে কেবল এই সহজ কথাটুকু পাই যে, মানুষ সেদিনও বেঁচে ছিল। প্রাণের কাছে প্রাণের বাণী আশ্চৰ্য্য। নানাবিধ সঙ্কল্প R S \o