পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চেপে ধরে মনকে, সাহিত্যিক জীবনের ধ্বংসাবশেষে ব্যর্থতার ভূপগুলো মরুপ্রদেশের চেহারা দেখিয়ে দেয়। সন্ধ্যাসঙ্গীত, প্রভাতসঙ্গীত, ছবি ও গানকে নতুন সংস্করণের ওঝা ভূত নামিয়ে দেখাচ্চেন— তাদের সত্যতা চলে গেছে অথচ তারা বেঁচে থাকার ভান করচে। আমার লেখার যে অংশে ভুতুড়ে বাড়ি সেইখানে আমি আছি সম্প্রতি। এখানে পরাভবের ইতিহাস আমার মনে একটা অবসাদ ঘনিয়ে রেখেছে। দুর্ভাগ্যক্রমে বিস্তর লিখেছি, অগত্যা তার মধ্যে বিস্তর আছে যা ভালো নয়। যেমন জীবনটা তেমনি তার সাহিত্যরচনা ভালোমন্দ জড়িয়েই। সে তো অন্যায় নয় – অতি বিশুদ্ধ বাছাইয়ে বাস্তবতার ক্ষতি হয়। আমার আপত্তি হচ্চে সেই অংশে যেখানে একহাটু কাদা ভেঙে এসেছি, ঘাটে এসে পৌছইনি। নিস্কৃতি নেই। ত্যাজ্য যারা কেবলমাত্র জন্মস্বত্বের দোহাই দিয়ে মিতাক্ষরার আইন অনুসারে তারা উত্তরাধিকারের দলিল বার করে। শাস্ত্রে আছে মৃত্যুতেই ভবযন্ত্রণার অবসান নেই, আবার জন্ম আছে। আমাদের যে লেখা ছাপাখানার প্রসূতিঘরে একবার জন্মেছে তাদের অন্ত্যেষ্টি সৎকার করলেও তারা আবার দেখা দেবে। অতএব সেই অনিবার্য জন্মপ্রবাহের আবর্তন অনুসরণ করে প্রকাশকেরা যদি বর্জনীয়কে আসন দেন সেটাকে দুষ্কর্ম বলা চলবে না। সে এক সময় গেছে যখন সমস্ত দেশেরই মন আর তার ভাষা ছিল কাচা, তার মনের জমি ছিল নিচু। তখনকার উপাদানে কমদামী করে দিত উৎপন্ন জিনিষকে । আমরাই २8 8