পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিঠিতে জানতে পারলুম। ভারতবর্ষ থেকে তোমরা একটা কথা ঠিক বুঝতে পার না যে ঐ সব কাগজের অস্তিত্ব সমস্ত পৃথিবীর কাছে কতই অকিঞ্চিৎকর। ভারতবর্ষের মশার ডাক যেমন এখান থেকে একেবারেই শোনা যায় না ঐ সব কাগজের গুঞ্জনধ্বনিও তেমনি। মেরি পিক্‌ফোর্ড সম্বন্ধে আমার মন্তব্য নিয়ে এখানকার লোকে কোনো বিরুদ্ধ সমালোচনা করে নি, বরঞ্চ প্রশংসা করেছিল । এখানকার যে সব মনীষী বিশ্বমানবের সমস্যা বড় রকম করে চিন্তা করচেন তাদের অনেকের সঙ্গে আমার দেখা হয়েচে । এদের সঙ্গে আলাপ হলে মন মুক্তিলাভ করে। কেননা মানুষের মুক্তির ক্ষেত্র হচ্চে ভাবের ক্ষেত্ৰ— সেইখানে স্বার্থলোকের সমস্ত নিয়ম উল্টে যায়— সেইখানে মানুষ নিজের সুখদুঃখের, নিজের ভোগসম্ভোগের অতীত হয়ে বিচরণ করে— সেখানে বর্তমানের বন্ধন তাকে ধরে রাখতে পারেনা, সেখানে আশার আলোকে সমুজ্জ্বল সীমাহীন ভবিষ্যতের মধ্যে আত্মার বিহার । মানুষের মধ্যে যারা সেই ভাবীকালবিহারী তারাই অমৃতলোকের অধিবাসী, কেননা মৃত্যুর ক্ষেত্র হচ্চে বৰ্ত্তমান, এইখানেই পদে পদে ক্ষয়, এইখানেই যত আঘাত যত নৈরাশ্র্য –এই সঙ্কীর্ণ বৰ্ত্তমানের মধ্যেই সমস্ত চেষ্টাকে আবদ্ধ করে মানুষ পীড়িত হয়— কেননা মানুষ হচ্চে “অমৃতস্য পুত্রঃ” মানুষ হচ্চে দিব্যধামবাসী । সেই দিব্যধাম হচ্চে অসীমকালে, খণ্ডকালে নয় । আমাদের যথার্থ বন্ধন কালের বন্ধন । যখন আমরা কোনো ব্যথা বোধ করি তখন সেই ব্যথা অামাদের ૨ S