পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসছে। দূরে গিরিশিখরের নীলিমার আভাস থেকে দেখা যাচ্ছে শুভ্র রেখায় নিঝরের বিশ্বযাত্রা, সে স্বচ্ছ, সে নির্মল, সূক্ষ্ম আলোয় ছায়ায় রচিত তার উত্তরীয়, তার কলধ্বনি দূর থেকে কানে পৌছয় না, মনে পৌছয় তার অশ্রুত কল্লোল। এইখানে প্রতীকরূপে দেখতে পাই দূর পুরাতনকালীন আমাদের রচনার ধারা। এর যা রস তা ভোগ করেছি অনেক দিন, পরিবেশনও করেছি, একে অবজ্ঞা কোরো না । কেননা যদি রসাত্মকতাকে কাব্যের ধর্ম বলা হয় তবে এ রসেরও বিশেষত্বকে স্বীকার করে নিতে হবে। তবে কিনা এইখানেই শেষ নয়। সেই ঝরনা নেমে এল নিম্নভূমিতে, অনেক কিছুর সঙ্গে মিলিয়ে হ’ল নানারঙা । কত ভাঙাচোর। কত খসে-পড়া জিনিস সে টেনে নিয়ে চলেছে ; কত আওয়াজ মিলছে তার কলস্বরে, যার সঙ্গে তার সুরের মিল নেই, হয়তো ধোবার গাধা চেচিয়ে উঠছে তার তীরের ডাঙায় । কোথাও বুদবুদপুঞ্জ উঠছে ফেনিয়ে, কোথাও বালি, কোথাও কাদা, কোথাও শহরের আবর্জনা, সমস্ত কিছুকে আত্মসাৎ করে তার ধারা, তার চলমান রূপ। কিছুই তাকে সম্পূর্ণ প্রতিবাদ করে না, তুচ্ছতা তাকে পরিহাস করে কিন্তু প্রতিরোধ করে না। মনে ভেবে দেখলুম স্থষ্টির এই সর্বগ্রাহী লীলারূপকে কিছু কিছু যাচাই না করে নেওয়া আমার অভ্যস্ত নয়। এইটেতেই বোধ করি আমাদের সেকালের সাবধানী শুচিত, যেটাকে তোমরা আভিজাত্যবুদ্ধির শৌখিনত ব’লে হেসে থাকে, বলে বুর্জোয়া। তা হোক কিন্তু তুমি যে ভূতলচারিণী SS)○