পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চলেছেন কেউ বা মানুষ-খুন-করা অমর নামধারী, কেউ বা ছড়া-বানানো অমর, কোনো রূপসী মুগ্ধ মনের বিহ্বলতার অমর। অকূল ঘুমের তরঙ্গ-দোলায় তুলতে তুলতে হাসছেন মহাকাল, এই-সব ভাসমান ফেনাগুলোর উদগত অহমিকার দিকে তাকিয়ে । “দুম” কবিতা থেকে আমি যা বুঝলুম সেটাই একমাত্র অর্থ কি না জানি নে— কেননা অর্থস্পষ্টতার প্রতি কবির মমতা নেই। এই কবিতাগুলি পড়লে ছায়াপথের সঙ্গে তুলনা মনে আসে, এখানে স্পষ্ট এবং অস্পষ্টের মেলা বসে গেছে। যেখানে অস্পষ্টতার আবরণ সুন্দরীর ঘোমটার মতো বিশেষ রস প্রকাশের সহায়তা করে সেখানে তাকে কবিত্বের খাতিরে মেনে নিতে পারি কিন্তু যেখানে বাণী তার চেয়ে দুর্গমতায় পৌচেছে সেখানে মার্জন করতে পারব না। কেননা যে বচন একেবারেই বোধগম্যতার বাইরে সেখানে যিনি বলছেন তিনিই একমাত্র বক্তা এবং তিনিই একমাত্র শ্রোতা, সাহিত্যের সর্বজনীন সভায় তার স্থান নেই। এর মধ্যে সংকটের কথা এই যে বোধগম্যতার রাস্তা আমার কাছে বন্ধ ব’লেই যে অন্তের কাছেও বন্ধ তার নিশ্চয়তা নেই। সাহিত্যের এই রহস্য চিরদিনই রহস্য থেকে যাবে— এই তর্কের মধ্যে আমরা সকলেই চলে এসেছি, আঘাত পেয়েছি আঘাত করেছি। বসন্ত আসবে আসবে করছে, বাতাসে শীতের আমেজ আছে। সামনে সকাল বেলার কাচা-সোনা-রঙের রৌদ্রে পাণ্ডুবৰ্ণ আকাশের গায়ে য়ুকলিপ্টসের ঝালর-দোলানো ○&bア