পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৌতুহল মেটাবার জন্যে দরদ-ওয়ালা কথার ফেরি করা অন্যায়— এতে ইতিহাস রক্ষাও হয় না, কেননা নির্বিচারে সবরকম কথাকে একত্র পুঞ্জীভূত করাকে ইতিহাস বলে না— মুহূৰ্ত্তের জিনিষকে চিরদিনের আসনে বসালে ইতিহাসকে নষ্ট করাই হয়। -- এই তো গেল লেখার হাঙ্গামা । তারপর, অাদর অভ্যর্থনা নিমন্ত্রণ আমন্ত্রণ বক্তৃতা মোটর যাত্রা রেলযাত্রা প্রভৃতিতে অতিমাত্রায় ঠাসা হয়ে আমার দিনগুলো নানা আকারে ফুলে উঠেচে– ঠিক যেন আমাদের সুনীতির ঝুলিটার মতে— তার মধ্যে ময়লা কাপড় থেকে আরম্ভ করে পিতলের তৈজসপত্র পৰ্য্যন্ত সকল প্রকার অসঙ্গত জিনিষের সঙ্গতি— বাহকের যখন বহন করে, দেখি, তাদের পিঠ বেঁকে যায়। আমারে। পিঠ বেঁকে এসেচে। প্রতি মুহূৰ্ত্তে মনে হয়, আর পেরে উঠ চিনে। আমার দিনের ঝুলি সুনীতির ঝুলির মতোই প্রত্যহ তার বোঝাই বাড়িয়েই চলেচে— এখন কেবলি মনে হচ্চে আর ওটাকে টেনে বেড়ানো চলেন । আশার কথা এই যে এখানকার পথের প্রায় প্রান্তে এসেচি। আজ ১২ই তারিখ– ১৬ই তারিখে জাভার মুখে পাড়ি দেব। তখন আর একটা বুলি ভৰ্ত্তি করা সুরু হবে। শান্তিনিকেতনের শ্রাবণীমূৰ্ত্তির আভাস তোমার চিঠিতে পেয়ে ক্ষণকালের জন্তে মনটা ব্যাকুল হোলো। আমাদের সামনে এখনো অন্তত দুটো মাস আছে। অর্থাৎ আশ্রমে যখন শিউলিফুলের দিন ফুরিয়ে আসবে তখন সেখানে ফিরব । & 8