পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্থ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* >- চিঠিপঞ্জ হচ্ছে লোকদের ভালই লাগবে । আমি যত দেখুলুম জাপানের ছবি এবং এখানকার, আমার ততই দৃঢ় বিশ্বাস হয়েচে আমাদের বাংলা দেশে যে চিত্রকলার বিকাশ হচ্চে তার একটা বিশেষ মাহাত্মা আছে । এ যদি নিজের পথে পূরে উদ্যমে চলতে পারে তাহলে পৃথিবীর মধ্যে আপনার একটা খুব বড় জায়গা পাবে। দুঃখের বিষয় এই যে-– বাঙালীর প্রতিভা যথেষ্ট আছে কিন্তু উদ্যম ও চরিত্রবল কিছুই নেই। আমরা নিজের দেশকে এবং কাজকে একটা বৃহৎ দেশ এবং কালের উপর দাড় করিয়ে উদারভাবে দেখতে জানিনে। সেইজন্তে আমাদের যার যেটুকু শক্তি আছে সেইটুকু নিয়ে ছোট ছোট ভাবে কারবার করি— তারপরে একটু ফু লাগলেই সেই শিখা নিবে যায় তারপর আবার যেমন অন্ধকার তেমনি অন্ধকার। জাপানে আধুনিক শিল্পীদের জন্যে ওকাকুরা যে স্কুল করে গেছে তাতে কত কাজ চলচে তার ঠিক নেই। তার মানে এই কাজে ওরা যথার্থভাবে আত্ম। বিসর্জন করেচে– কেবলমাত্র সেখীনভাবে কুণোভাবে কাজ চলচে না । সিয়াটেলে একটা স্টডিয়োতে গিয়ে দেখলুম সেখানে জন কয়েক আর্টিস্টে মিলে কাজ করতে লেগে গেছে। অর্থাৎ এ দেশে যে কোনো মানুষকে যে কোনো আইডিয়াতে পেয়ে বসে, সেই আইডিয়াকে বৃহৎ দেশ ও কালের সঙ্গে সংলগ্ন না করে সে থাকতেই পারে না— এটাই হচ্চে এদের স্বভাবসেইজন্যেই এর বড় হয়ে উঠেচে। আমরা বিচ্ছিন্ন, বিভক্ত, অলস, আমরা নিজের একাকীত্বের বাইরে পা বাড়াতে পারিনে