সভাপতি ছিলেন গুরুদাসবাবু। রবিবাৰু তার নবরচিত মাটিকা পাঠ করতে äಡೆ ভূমিকা স্বরূপ বলতৃে লাগলেন—“কয়েক বৎসর পূর্বে স্বগীয় বঙ্কিমবাবু আমাকে এই হলে কোনো লেখা পড়তে অনুরোধ করেছিলেন। র্তার সেই অনুরোধ রক্ষা করবার স্থযোগ আমার হয়নি। সম্প্রতি আজকার মাননীয় সভাপতি মহাশয় আমাকে এখানে কিছু পাঠ করতে অনুরোধ করেন। আমি মনে করলাম যে এই স্বযোগে বঙ্কিমবাবুর অনুরোধের ঋণ পরিশোধ করতে পারব, তাই অামি আমার লেখা পাঠ করতে সম্মত হয়েছিলাম। কিন্তু আজ আমার লেখা এখানে পাঠ করতে অামার স্বভাবতই সঙ্কোচ বোধ হচ্ছে। কারণ, অল্প কয়েক দিন আগে এই হলে, এই সভাপতির অধীনে হয়তো বা ঠিক এই জায়গায় দাড়িয়ে অামার কবিতার বিরুদ্ধ সমালোচনা পাঠ হয়ে গেছে। যিনি সমালোচক, তিনি বয়সে তরুণ । তরুণ বয়স যথার্থ সমালোচনার সময় নয়। তরুণ বয়সে লোকে কবি হতে পারে, কিন্তু সমালোচক হতে হ’লে প্রবীণ বয়সের দরকার । কঁচা বাশে বাণী হতে পারে বটে, কিন্তু লাঠি হ’তে হ’লে পাক৷ বঁাশের দরকার । মানুষকে ভাইপে হয়েই জন্মাতে হয়, কিন্তু অনেক লোকে জ্যাঠা হবার পূর্বেই জ্যাঠাইয়া যান। সকল মানুষের মধ্যে সকল গুণ থাকে না, আর তা প্রত্যাশ করাও যায় না। ময়ূরের পুচ্ছ আছে কিন্তু তার কণ্ঠে কোকিলের স্বম্বর নেই, আবার কোকিলের কণ্ঠ আছে, তার ময়ূরের মতন মুন্দর পুচ্ছ নেই। ইক্ষুদণ্ডে আম্রফল ফলে না, আর আম্রশাখায় ইক্ষুরস পাওয়া যায় না। অতএব কবির কাব্যে কি আছে তারই বিচার না করে, কি নাই তাই নিয়ে তাকে দোষারোপ করলে তার প্রতি অবিচার করা হয়। তাই আজ আমি অত্যন্ত সঙ্কোচের সঙ্গে এখানে এসেছি আমার লেখা পাঠ করতে।” এই ভূমিকা ক’রে তিনি গান্ধারীর আবেদন পাঠ করতে আরম্ভ করলেন। সে কী কণ্ঠস্বর, কী মুন্দর উচ্চারণ, কী কবিত্বমধুর ওজস্বী ভাষা ! সমস্ত শ্রোতা স্তব্ধ হ’য়ে শুনতে লাগলেন । છે જે ૨
পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১০
অবয়ব