পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাধুৰ মাত্র প্রকাশ পায়। যে সহজ-পূজ্য তাকে ভোগ্যের পদবীতে নামিয়ে আনে যে সেও একটা আনন্দ পায় বটে, কিন্তু সে আনন্দ অতি নিকৃষ্ট শ্রেণীর। পতিতা হলেও নারীর স্বাভাবিক পবিত্রতা তার মধ্যে প্রচ্ছন্ন থাকে, অমুকুল অবস্থা পেলে সে পুনর্বার পবিত্রতা লাভ করতে পারে। পাপের অন্যায়ে সে তার আত্মাকে কলুষিত করেছে মাত্র, কিন্তু তার আত্মা একেবারে নষ্ট হয়নি— তার আত্মা বাষ্পাচ্ছন্ন দর্পণের মতো হয়ে আছে। ঋষির কুমারই পতিতার কলুষ-তামস জীবনের মধ্যে প্রেমের জ্যোতি বিকীর্ণ ক’রে প্রকৃত জীবনপথের সন্ধান তাকে দেখিয়ে দিলেন । ভক্ত যখন জাগায় তখনই তো ভগবান জাগেন, তাই তো আমরা বলি জাগ্ৰং ভগবান! পতিতার নারীত্বের পূজার কেউ ছিল না, ঋষিকুমার তার প্রথম পূজারী হয়ে তাকে তার নারীত্বের সঙ্গে পরিচিত ক’রে দিলেন। সৎগুণ সে পর্যস্ত নিক্রিয় যে পর্যন্ত না ভাবের ভাবুক এসে তার উপাসনা করছে। শক্তিমানের পূজা না পেলে শক্তি জাগরিত इशू ब्ा ।” এই ভূমিকা ক’রে তিনি কবিতাটি পড়তে আরম্ভ করলেন । সে স্বর কামের ভিতর দিয়া মরমে পশিয়া গো আকুল করিল মোর প্রাণ । পতিত কবিতাটি পড়া হ’লে স্বরোধবাবু অনুরোধ করলেন ‘বিসর্জন নাটকের রঘুপতির উক্তি পাঠ করতে । এর পূর্ব রাত্রেই সঙ্গীতসমাজে ‘বিসর্জন নাটক অভিনয় হ’য়ে গেছে, বরোদার মহারাজ গায়কোয়াড়ের সম্বর্ধনা উপলক্ষে। রবিবাবু তাতে রঘুপতির ভূমিকা নিয়ে অভিনয় করেছিলেন। তিনি রঘুপতির উক্তি পড়তে অমুরুদ্ধ হ’য়ে বললেন, “নাটকের পাত্র-পাত্রীর কথা কেবল পড়লে তার যথার্থ ভাবটি প্রকাশ করা যায় না। নাটক অভিনয়ে যে অঙ্গভঙ্গী প্রভৃতি থাকে তাতে ভাব প্রকাশে সাহায্য করে। ইংরেজী ড্রাম মানে একৃশান, মোশান ।” তার পর তিনি রঘুপতির উক্তি পাঠ করলেন। 3 о в