পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাঠ শেষ হ’লে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম— “ব্রাহ্মণ” কবিতার মধ্যে, ষে আছে— ‘যৌবনে দারিদ্র্যদুখে বস্তৃপরিচর্ষা করি পেয়েছিন্তু তোরে, জন্মেছিস ভর্তৃহীন জবালার ক্রোড়ে, গোত্ৰ তব নাহি জানি তাত ? এর অর্থ কি ? অামার এক বন্ধু এর অর্থ করেন যে অনেক দেরারাধনা মানত করার পর তোমাকে পেয়েছি। কিন্তু আমি বলি ওর অর্থ বহু ব্যক্তির সঙ্গে ব্যভিচারের মধ্যে তোমার জন্ম, তাই আমি জানি না তুমি করে পুত্র। আমাদের মধ্যে কার অর্থ সঙ্গত ?” রবিবাবু অত্যন্ত লজ্জিত হয়ে মাথা নীচু ক’রে মৃদু স্বরে বললেন— “আপনি যে অর্থ করেছেন তাই ওর অর্থ।” অপরিচিত আমার কাছে ঐ কথার আলোচনায় তিনি অত্যন্ত লজ্জা ও সঙ্কোচ বোধ করছেন বুঝতে পেরে আমি আর কোনো কথা বললাম না। এই আমার রবিবাবুর কাছে প্রথম যাওয়া । এই সময় মজুমদার লাইব্রেরীর উদ্যোগে পক্ষাস্তে একটি ক’রে সাহিত্যিক সভা হতো। তাতে গান, আবৃত্তি, প্রবন্ধপাঠ, আলোচনা প্রভৃতি হতো। সেই সভায় রবিবাবু, অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়, রজনীকান্ত সেন প্রভৃতি যশস্বী সাহিত্যিকেরা যোগ দিতেন। একদিন রবিবাৰু গান গাইতে আরম্ভ ক’রে একটা কলি পুনঃপুনঃ ফিরে ফিরে গাইছেন আর লজ্জিত ভাবে মুচ কি মুচকি হাসছেন দেখে আমি বুঝতে পারলাম যে তিনি গানের পদ ভুলে গেছেন, ও মনে করবার চেষ্টা করেও মনে করতে পারছেন না। তখন আমি উঠে দাড়িয়ে গানের পদ চেচিয়ে ব’লে দিতে লাগলাম, ও তিনি গাইতে লাগলেন। আমি তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করাতে তিনি আমার দিকে এমন কোমল দৃষ্টিতে একবার চাইলেন যে আমার মন আনন্দে পূর্ণ হ’য়ে গেল। তার সেই দৃষ্টিতে লজ্জা, २ ० >