পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃতজ্ঞতা, ধন্যবাদ ফুটে উঠেছিল। এই সময় আমি আমেরিকার কবি অলিভার ওয়েগুেল হোল্মস সাহেবের একটি কবিতা অনুবাদ করেছিলাম “বুদ্ধের স্বপ্নদর্শন” নাম দিয়ে। আমি সেই কবিতাটিতে স্বকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাক্ষর ক’রে বঙ্গদর্শন’সম্পাদকের নামে ডাকে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। সেটি ছাপা হলো দেখে আমার আর আনন্দের সীমা রইল না। রবিবাবুর বিচারে যে কবিতা উত্তীর্ণ হয়ে গেল সে তো গিবিজয়ী হতে পারে। তখন আমি শৈলেশবাবুকে বললাম যে সেটি আমারই লেখা, সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়েরই রূপস্তর মাত্র। রবিবাবু শৈলেশবাবুর কাছে আমার কথা শুনে বলেছিলেন যে আমার আত্মগোপন ক’রে ছদ্মনাম মেবার কোনো আবখ্যক ছিল না । এই সময়ে আমি লেখবার চেষ্টা করেছিলাম। আমি একটি প্রবন্ধ “দাবার জন্মকথা” লিখে বঙ্গদর্শনে’ ও “লিখনম্বষ্টির ইতিহাস” লিখে ‘ভারতী’তে ভয়ে ভয়ে দিয়েছিলাম। দুটিই আমার স্বনামে ছাপা হলো । শ্ৰীমতী সরলা দেবী আমাকে নিজে ডেকে আমার সঙ্গে আলাপ করলেন এবং অামি র্তাকে ভারতী সম্পাদনে সাহায্য করতে পারি কি না জিজ্ঞাসা করলেন। আমি তখন বি.এ. পাস ক’রে বেকার বসে ছিলাম, কেবল দুপুর বেলা ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরীতে পড়তে যাওয়া ছাড়া আমার আর কোনো কাজ ছিল না। আমি সরলা দেবীকে সাহায্য করতে সম্মত হলাম। আমি শুধু লেখক হওয়ার সুযোগ পেলাম না, বহু বিখ্যাত লেখকদের সঙ্গে পরিচিত হ’তে লাগলাম এবং বহু লেখকের লেখা আমার হাত দিয়ে মার্জিত হ’য়ে প্রকাশিত হ’তে লাগল। কাশীতে সাহিত্য-পরিষদের শাখা প্রতিষ্ঠিত হবে ; সেখানকাৰু সেক্রেটারী আমাকে অনুরোধ করলেন উদ্বোধনের উপযোগী একটি গান লিখে দিতে হবে। আমি কবিতা লিখবার দুশ্চেষ্টা মাঝে মাঝে করলেও অামার কবিত্বের প্রতি আমার কোনো দিনই শ্রদ্ধা বা বিশ্বাস ছিল না । ૨ ૦ ૨