পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি তাদের মুখ থেকে কেড়ে একটি নাসপাতি ও একটি কলা রক্ষা করলাম কবির জন্ত । অনেকক্ষণ পরে কবির পান্ধী এলো। কবি এসে যখন শুনলেন মাঠের মাঝখানে একটি গাছ ছাড়া আর কোনো আশ্রয় নেই, এবং বিশুদ্ধ মেঠো বাতাস ছাড়া আর কিছু খাদ্য সংগ্রহের সম্ভাবনা নেই, তখন তিনি বললেন– “ভাগ্যে মেয়েরা আর শিশুটি আসেনি। আর পাহাড় দেখে দরকার নেই, ফেরো ।” فٹے আমি বললাম—এতদূর যখন এলেন তখন গুহা না দেখেই ফিরে যাবেন ? তিনি পান্ধী থেকে নামতে কিছুতেই রাজী হলেন না। তখন আমি জোর ক’রে তাকে কিছু খাওয়ার জন্য অনুরোধ করলাম। তিনি কেবল একটি কলা খেলেন। আমি নাসপাতি ছাড়িয়ে দিলাম, কিন্তু তিনি তা গ্রহণ না ক’রে বললেন—“আমার কি শক্ত জিনিস খাবার জো আছে। তোমরা যদি কিছু খেতে পাও তবে উমাচরণকেও একটু দিও।” অামি বললাম— উমাচরণকে আমি খেতে দিয়েছি। উমাচরণ র্তার ভৃত্য, বালককাল থেকে তার পত্নীর কাছে অাদরে যত্বে কাজ শিখে মানুষ হয়েছে। ভূত্যের প্রতি কবির সস্তানবাৎসল্য ছিল। সন্ধ্যাবেল বেলা ষ্টেসনে ফিরে গেলাম। কবির সমস্ত দিন স্নান হয়নি, জাহার হয়নি, রৌদ্রে পথে যাতায়াতে ও মনের বিরক্তিতে র্তার চেহারা অত্যস্ত স্নান ও গম্ভীর হয়ে উঠেছে। তিনি ষ্টেসনের এক ধার থেকে আর এক ধার পর্যন্ত প্লাটফর্মের উপর পায়চারি ক’রে বেড়াতে লাগলেন। আমরা কেউ তার কাছে যেতে সাহস করছিলাম না। অনেকক্ষণ পরে আমি আস্তে আস্তে র্তার পিছনে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে চলতে লাগলাম। তিনি আমাকে নিকটে দেখে বললেন—“জীবনে দুঃখ পাওয়ার দরকার আছে।” অামি র্তার কথা সমর্থন ক’রে কি বলতে গেলাম। তিনি সে কথা গ্রাহ না ক’রে দুঃথ সম্বন্ধে দার্শনিক তত্ত্ব অবতারণা ক’রে অনর্গল বলে

  • > ケ