পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এতক্ষণে সে ভদ্রলোক উঠলেন। তিনি চলে গেলে কবি কুপিত ভাবে আমাকে বললেন—“চারু, তোমাকে আমি আমার বন্ধু ব’লে জানতাম, কিন্তু সে ভ্রম আজ আমার ঘুচল ।” আমি তো অবাক । ভীত দৃষ্টিতে তার মুখের দিকে চাইতেই তিনি রেগে বললেন—“তুমি আমাকে ঐ ফ্রডের ভূতের হাতে অসহায় ফেলে রেখে চলে যাচ্ছিলে কোন আক্কেলে ।” অামি তো এতক্ষণে হাফ ছেড়ে হেসে বঁাচলাম । সেই ভদ্রলোক এতক্ষণ ফ্রয়েড নামকে ফ্রড উচ্চারণ ক’রে ক’রে আমাদের মনের মধ্যে যে হান্ত জমা ক’রে তুলেছিলেন, তা এতক্ষণে মুক্তি পেয়ে গেল । =می এর পরে একদিন আমি রাত নটার সময় তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে দেখলাম তার ঘরে তখনে অনেক লোক ব’সে রয়েছেন । অামাকে দেখে রথীবাবু আমাকে বাইরে ডেকে বললেন—“সকাল থেকে বাবা এই ঘরে ব’সে অাছেন, তার এখনো স্নানাহার হয় নি, আপনি যদি পারেন সব লোককে বিদায় করতে একবার চেষ্টা ক’রে দেখুন।” অামি তখন নিতান্ত অসভোর মতন ঘরের সব লোককে ডেকে ডেকে কবির অবস্থা জ্ঞাপন করতে লাগ লাম। রূঢ় হবে বলে বাড়ীর লোকের যে কথা বলতে সঙ্কোচ বোধ করেছিলেন, আমি বাইরের লোক হওয়াতে তা অনায়াসে ব’লে সকলকে বিদায় করতে লগলাম। সকলকে বিদায় ক’রে আমিও বিদায় নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে সি*ড়িতে পা দিয়েছি, দেখলাম আর একজন ভদ্রলোক তখন সি*ড়িতে উঠছেন, রাত দশট হয়েছে, তার ডাক্তারী ব্যবসায়ের বিশ্রামের অবসরে তিনি কবির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসছেন। আমি তাকে সি*ড়িতেই গেরেপ্তার ক’রে কবির দুরবস্থার সংবাদ দিলাম, কিন্তু তার অমুকম্প উদ্রেক করতে পারলাম না । তিনি আবার ভয়ানক বাচাল ও গল্পে ; তিনি একবার কথা ফেদে বসলে কোথায় যে র্তার কম সেমিকোলন পড়বে তা কেউ বলতে পারে না, ২২৬