পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—“চারু, তুমি আমার মান মর্যাদা আর কিছু রাখলে না। তবে দরজা দাও, তোমার কাছে তো খেলো হয়েইছি, আর অপরের কাছে আমাকে খেলো কোরো না ।” কবি যখন কলকাতায় 'ফাল্গুনী’ নাটকের অভিনয় করেন, তখন তার হুকুমে আমার মতন মুখচোরা অক্ষমকেও রঙ্গমঞ্চে নামতে হয়েছিল। শেষ দৃশ্যে যখন কবি-বাউল সকলের সঙ্গে মিলে বসন্তের বন্দনা গান করছিলেন তখন আমি তাকে দেখার প্রলোভন ত্যাগ করতে না পেরে পকেট থেকে আমার চশমা বার ক’রে চোখে লাগিয়ে দিয়েছিলাম। কবি নাচতে নাচতে আমার কাছে এসেই দিলেন এক ধমক— চশমা খুলে ফেল বলছি ! ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে একজন বাংলার উপাধ্যায় চাই জেনে আমি সেই পদের জন্য প্রার্থী হবো স্থির ক’রে রবীন্দ্রনাথের সুপারিশ পাৰার জন্য তাকে শান্তিনিকেতনে পত্র লিখলাম। তিনি তখন কলকাতায় এসেছেন, আমি পীড়িত ছিলাম ব’লে খবর পাই নি। দুদিন পরে খবর পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। আমি তাকে আমার আবশ্বক নিবেদন করলে তিনি বললেন—“দেখো দেখি তোমার কাগু, তোমার কি সব অসাময়িক, যদিও তুমি সাময়িক পত্রিকার সম্পাদক ! এতদিন তুমি কী করছিলে? আজই সকালে আমি একজনকে ঐ কাজের উপযুক্ত ব’লে প্রশংসাপত্র লিখে দিয়েছি, এখন আমি তোমাকে কি ব'লে সুপারিশ করি বলে তো। তুমি আমাকে কী মুস্কিলেই যে ফেললে তার আর ঠিকানা নেই।” আমি বললাম—আপনি আমাকেও একটা যা হয় লিখে দিন। তার পর আমার গুণপনা আর আপনার প্রশংসা আর অপর প্রার্থীর গুণপনা ও আপনার প্রশংসা যাচাই হ’য়ে যার ভাগ্যে হয় জয় জুটে যাবে। কবি চিন্তিত হয়ে গম্ভীর হলেন। আমি বুঝলাম যে আমার অনুরোধ তাকে বিপন্ন করেছে। তখন আমি প্রশংসাপত্র বিনাই বিদায় २७ >