পাতা:চিঠিপত্র (ত্রয়োদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উ দেশু লইয়া অস্তকে বলপূর্বক উৎসাহিত করিবার চেষ্টা করি না— কালের উপর, সত্যের উপরে, বিধাতার উপরে সম্পূর্ণ ধৈৰ্য্যের সহিত নির্ভর করিয়া থাকি । ধীরে ধীরে স্বাভাবিক নিয়মে অস্তরের ভিতর হইতে অলক্ষ্য শক্তিতে যাহার বিকাশ হয় তাহাই যথার্থ এবং তাহার উপরেই নির্ভর করা যায় । ক্রমাগত বাহিরের উত্তেজনায় কতক লজ্জায়, কতক ভাবাবেগে, কতক অনুকরণে যাহার উৎপত্তি হয় তাহার উপরে সম্পূর্ণ নির্ভর করা যায় না এবং অনেক সময়ে তাহ হইতে কুফল উৎপন্ন হয় । আমি আশা করিয়া আছি যে, অধ্যাপকগণ, আমার অনুশাসনে নহে, অন্তরস্থ কল্যাণবীজের সহজ বিকাশে ক্রমশই আগ্রহের সহিত আনন্দের সহিত ব্ৰহ্মচৰ্য্যাশ্রমের সঙ্গে নিজের জীবনকে একীভূত করিতে পারিবেন। তাহারা প্রত্যহ যেমন ছাত্রদের সেবা ও প্রণাম গ্রহণ করিবেন তেমনি আত্মত্যাগ ও আত্মসংযমের দ্বারা ছাত্রদের নিকটে আপনাদিগকে প্রকৃত ভক্তির পাত্র করিয়া তুলিবেন । পক্ষপাত, অবিচার, অধৈৰ্য্য, অল্প কারণে অকস্মাৎ রোষ, অভিমান, অপ্রসন্নতা, ছাত্র বা ভৃত্যদের সম্বন্ধে চপলতা, লঘুচিত্তত, ছোটখাট অভ্যাসদোষ এ সমস্ত প্রতিদিনের প্রাণপণ যত্নে পরিহার করিতে থাকিবেন । নিজেরা ত্যাগ ও সংযম অভ্যাস না করিলে ছাত্রদের নিকট র্তাহাদের সমস্ত উপদেশ নিষ্ফল হইবে— এবং ব্রহ্মচৰ্য্যাশ্রমের উজ্জলতা মান হইয়া যাইতে থাকিবে । ছাত্রেরা বাহিরে ভক্তি ও মনে মনে উপেক্ষা করিতে যেন না শেখে । › ♥ግ ১৩১২