পাতা:চিঠিপত্র (ত্রয়োদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংবাদপত্রে প্রচারিত এই খবর পড়ে মনোরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ৮ নভেম্বর ১৯৩৯ তারিখ সংবাদপত্রের কর্তিত অংশসহ রবীন্দ্রনাথকে এই চিঠি লেখেন— পরম শ্রদ্ধাস্পদেষু আজ Statesmanএ এই ছবিটি দেখে আমার একটি দুঃখের কথা মনে পড়লো । আমার প্রথম পাঁচটি মেয়ের বিয়েতে আপনাকে ডাকতে সাহস করিনি। কেননা ভয় ছিল পাছে কোনো কারণে হয়ত আপনার কোনো বিশেষ অস্তুবিধা হয় । শেষ দুটী মেয়ের বিয়েতে সাহস করে আপনাকে ভেকেছিলুম। আপনি আসেন নি । মধ্যে মধ্যে কাগজে দেখেছি আপনি সময়ে সময়ে বিবাহাদিতে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেচেন। আজ এই ছবিটি দেখে ও মনে হোলো এ সৌভাগ্য থেকে কেবল আমিই বঞ্চিত হয়েচি । নলিনীরঞ্জন সরকার ধনী লোক কিন্তু আমি জোর করে বলতে পারি আস্তরিকতার দিকে থেকে তার চেয়ে আমার আদর অভ্যর্থনা কোনো অংশে কম হোতে না বরং বেশীছ হোতে । কিন্তু আপনি এলেন না । আমি ধনী নই আমি দরিজ, নলিনীরঞ্জন লক্ষপতি— মনে হয় হয়ত এই দারিদ্র্যই আমার সৌভাগ্যের বাধাস্বরূপ হয়ে দাড়িয়েছিল । আমি যা কত আশা করে পাইনি, নলিনীরঞ্জন মহাশয় তা সহজেই পেলেন । কথাটা নতুন নয়— তবে আপনার কাছে ধনী ব’লে আকৃষ্ট হই নি । তাই আপনার কাছে এ অবহেলার কথা মনে হ’লে মনের মধ্যে একটা ব্যথা অনুভব করি । শুধু ধনীর সঙ্গে কোনো বন্ধনে কখনও আসি নি, আসতে চাইও নি । ইতি ভবদীয় ঐমনোরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথের এই চিঠিটি মনোরঞ্জনের পূর্বোঙ্কেত চিঠির উত্তরে লেখা । ৩১২