পাতা:চিঠিপত্র (দশম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অনধিগম্য, আপনি সেগুলি নূতন কবিত্ব মন্ত্রপূতঃ করিয়া সরল বাঙ্গলা পদ্যে করুণ রসের উৎস সৃষ্টি করিয়াছেন। এই পুস্তকখানি আমাদের বিদ্যালয় সমূহে প্রচলিত হইতে দেখিলে মুখী হইব, কিন্তু ইহার উন্নত ও নির্ম্মল নৈতিকতত্ত্ব বালকগণের অভিভাবকগণের পাঠের পক্ষেই বিশেষ উপযোগী। আপনার অনুপমেয় শব্দলালিত্য, শিল্পীর ন্যায় গল্পের চারুগ্রন্থন, ও উৎকৃষ্ট কবিত্ব এই কাব্যের সর্ব্বত্র সুলভ, তাহা সমালোচকগণ বিশ্লেষণ করিয়া দেখাইবেন; কিন্তু সাহিত্যিক সৌন্দর্য্যের ঊর্দ্ধে এক মহানৈতিক ব্রত উদযাপন চেষ্টায়ই বোধ হয় কবির জীবনেরও প্রকৃত সফলতা; সেই নীতি সূত্রগুলি সরস কবিত্ব কৌশলে “কণিকা”য় প্রদর্শিত হইয়াছে এবং তাহাদের অনুষ্ঠান ও দৃষ্টান্ত এই নূতন কাব্যখানিতে সঙ্কলিত হইল। এই পুস্তকের নাম কবি বিনয়সহকারে “কথা” রাখিয়াছেন, পাঠকগণ ইহা “কথামৃত” বলিয়া বুঝিতেছেন। বসন্তের প্রাক্কালে এই নির্ম্মল অধ্যাত্মরাজ্যের নূতন রাগিণী বাঙ্গলা কাব্যের সচরাচর লব্ধ সুরের এক গ্রাম ছাড়াইয়া উঠিয়াছে, এই কাব্যখানি দ্বারা বাঙ্গালা সাহিত্যের স্থান এক শ্রেণী উর্দ্ধে উন্নীত হইল, সন্দেহ নাই।

 আপনার সদয় ও বহুমূল্য উপহারের জন্য আমার সসম্মান কৃতজ্ঞতা গ্রহণ করুন।

বিনীত
শ্রীদীনেশচন্দ্র সেন

৫৬