পাতা:চিঠিপত্র (দশম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বিরুদ্ধে একবার কোনো লোক বদ্ধপরিকর হইয়া দাড়াইয়াছিলেন এবং ক্রমাগত বিদ্বেষের বিষ পত্রিকায় বর্ষণ করিতেছিলেন। আমি অন্য প্রসঙ্গে তাঁহাকে লিখিয়াছিলাম, উত্তরে তিনি লিখিয়াছিলেন “পত্রে আপনি যে কথার আভাসমাত্র দিয়া চুপ করিয়াছেন, সে কথাটা আমার গোচর হইয়াছে।...বিদ্বেষে কোনো সুখ নাই কোনো শ্লাঘা নাই, এইজন্য বিদ্বেষটার [বিদ্বেষ্টার] প্রতিও যাহাতে বিদ্বেষ না আসে, আমি তাহার জন্য বিশেষ চেষ্টা [যত্ন] করিয়া থাকি।”[১]

 ...আমি প্রাচীন বঙ্গীয় কাব্য সমূহ হইতে একটা বড় সংগ্রহ-গ্রন্থ সংকলন করিব এই জন্য তিনি স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মহাশয়কে অনুরোধ করিয়াছিলেন এবং আমাকে লিখিয়াছিলেন “প্রাচীন কবিতা যে প্রস্তাব আপনার নিকট করিয়াছি, তাহা একান্তই [নিতান্তই] প্রয়োজনীয় এবং আপনি ছাড়া আর কাহারো দ্বারা সাধ্য নহে।”[২]

 ...যখন আমি বঙ্গভাষার ইতিহাস ইংরেজিতে লিখিতে আরম্ভ করি তখন কি ভাবে লিখিতে হইবে তৎসম্বন্ধে অনেক উপদেশ রবীন্দ্রবাবু দিয়াছিলেন।

 ...প্রদীপে কবি হেমচন্দ্র সম্বন্ধে আমার একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হইয়াছিল, সে প্রবন্ধটি রবীন্দ্রবাবুর বড়ই ভাল লাগিয়াছিল। তিনি বঙ্গদর্শনের সঙ্গে আমার একটা ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ স্থাপন করিয়া দিয়াছিলেন। বঙ্গদর্শন পরিচালনার গুরুভার আমার উপর ছিল— অনেক পত্রে তাহার উল্লেখ করিয়াছেন। তিনি বিলাতী ও দেশীয় অনেক কাগজ হইতে সন্দর্ভ সঙ্কলন করিবার জন্য সেগুলি আমার নিকট পাঠাইয়া দিতেন।

 তাঁহার পত্রগুলির পাতা উল্টাইয়া সেই প্রীতি-সম্বন্ধের পূর্বস্মৃতি মনে জাগিয়া উঠে।

  1. দ্র° রবীন্দ্রনাথ- লিখিত পত্র ৬
  2. দ্র° রবীন্দ্রনাথ- লিখিত পত্র ৩৫

৭৭