পাতা:চিঠিপত্র (দ্বাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কি, মনুষ্যত্বের অপমানজনক । জীবনযাত্রা যখন সংকীর্ণ পরিধিতে স্তব্ধ হয়ে জটাবহুল ছিল না তখনকার প্রত্যেক রীতিনীতি ধৰ্ম্মের নামে সনাতন চেহারা ধারণ করবার শাস্ত অবকাশ পেয়েছিল। যেখানে অবস্থা আজও প্রায় সেই রকমই আচঞ্চল, নব যুগের আবৰ্ত্ত যেখানে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে নি সেখানকার স্থাবরতায় পুরাতন নীতির ভিত্তি কাপে নি— সেখানে অবস্থাস্তরের তাণ্ডব নৃত্যে পুরাতন অমুশাসনপাশ ছিন্ন হয় নি । সেই অবস্থার ভাষায় অন্য অবস্থাকে বিচার করা চলে না । যুরোপে আর্থিক নীতি অনেক দিন থেকেই বিশেষ পন্থায় চলছিল । সেখানে ধনসৃষ্টি ও ধনভোগে ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতাই ছিল প্রবল । তার প্রথম আঘাত লেগেচে গার্হস্থ্যে । গৃহযাত্রায় স্বভাবতই স্ত্রীপুরুষের অধিকার ভাগ আছে । পুরুষের কৰ্ত্তব্য ধন আহরণ, মেয়ের কৰ্ত্তব্য সংসারের প্রয়োজনে তার ব্যয়ের ব্যবস্থা । মেয়েকে আর্থিক দিকে পুরুষের অধীন থাকতেই হয় । সেই অধীনতায় পুরুষের ইচ্ছা ও আদর্শের সঙ্গে নিজেকে নম্রভাবে না মেলাতে পারলে সে বঁাচেই না । কিছুকাল থেকে যুরোপে জীবনযাত্রার আদর্শ বহুব্যয়সাধ্য হওয়াতে পুরুষেরা অনেকেই স্ত্রীর দায়িত্ব স্বীকার করতে কুষ্ঠিত । সেখানে ঘর ভেঙে বাসার বিস্তার বেড়ে চলেচে । মেয়েরা তাদের চিরকালের আশ্রয়চু্যত হয়ে স্বয়ং জীবিকাউপার্জনে বাধ্য হয়েচে । আর্থিক স্বাতন্ত্র্য যে লাভ করে সে স্বভাবতই ভীরুভাবে পরের মন জোগায় না। পাশ্চাত্য মহাদেশে এই অর্থোপার্জনরীতির বিপৰ্য্যয় ঘটাতেই ক্রমশই স্ত্রীধৰ্ম্মনীতির > * *