পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করে বলেচ সে মেনে নিতে আমার বাধে না । কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে যেখানে তাকে জড়িত করে সেখানে দেখতে পাই তোমাদের ব্যক্তিগত অভ্যাস । সেখানে সকল দেশের সব মানুষ মিলতে পারে না । তোমাদের দেবতত্ত্ব গ্রহণ করা সহজ, কিন্তু দেবকাহিনী অত্যন্ত বেশি প্রাদেশিক, তার বিচিত্র বিবরণ মূল ভাবকে বাধা দেয়। যেমন তোমার হাপানির ওষুধের কথা । শিকড়টা মানতে পারি যদি প্রমাণ পাই । কিন্তু ১৭ বছরের ব্রাহ্মণের মেয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান সহ সেটা তুলে আনলে তবেই তার শক্তি জাগবে এ কথা মানতে গেলে নিজের বিধিদত্ত বুদ্ধির পরে অবিচার করা হয় । তত্ত্বটা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত সুতরাং সেটা দেশকালপাত্রনির্বিবচারেই সত্য । কিন্তু তার আনুষঙ্গিক বিবরণ জনশ্রুতিমাত্র, এবং সে জনশ্রুতিও বিচারবুদ্ধিসমর্থিত জনশ্রুতি যদি না হয়, এবং যদি তাতে এমন কিছু থাকে যা আমাদের অপ্রমত্ত সাধারণ অভিজ্ঞতার বাইরে তাহলে দশজন বলে বলেই তাকে স্বীকার করে নিতে পারবো না । যে দেশে সকল কথাই এই রকম অন্ধভাবে স্বীকার করে নেওয়াই মানুষের অভ্যস্ত সে দেশের তুর্গতি কখনোই কাটে না । অযৌক্তিক কথাকে সন্দেহ করতেই হবে, তার পরেও যদি সেটা সপ্রমাণ হয় তাহলে কথা নেই। আমি নরদেবতাকে বিশ্বাস করি বুদ্ধের মধ্যে, কেননা বুদ্ধ অনৈতিহাসিক গালগল্পমাত্র নয়, বিশ্বাস করি ভগবদগীতার কৃষ্ণের মধ্যে, সে কৃষ্ণও মর্ত্য মানুষের ঘরের লোক । বৃন্দাবনকে যদি বলে আনন্দধামের রূপক তাহলে কোনো কথা নেই, যদি বৃন্দাবনকে ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক כאכל