পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

a q ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৩২ কল্যাণীয়াসু গত সোমবারে বোলপুরে যাবার কথা ছিল । বাধা পড়ে গেল । বুধবারে যাব । এতদিন তোমার সঙ্গে অনেক তর্ক করেচি । কিন্তু অামি যে জাতে তার্কিক নই দলিলসমেত তার প্রমাণ করে দেবার জন্তে সঞ্চয়িতা এক খণ্ড তোমার কাছে পাঠালুম ! সংসারে তর্ক বিতর্কের প্রয়োজন আছে, যেমন এই ধরাধামে পদক্ষেপ করে না চললে চলে না । কিন্তু মানুষের পিঠে পাখা নেই বটে মনে আছে । সে ওড়ার মুখেই উড়তে চায় অর্থাৎ সে প্রয়োজনের বন্ধন থেকে মুক্তি চায়। কবিতায় যে সঙ্গীত আছে, তার মধ্যেই আছে মুক্তিআকাশে পক্ষচালনের ছন্দ । সঙ্গীতের সুরে অর্থশাস্ত্রের সমস্যা আলোচন ও সমাধান করা চাই এমন কথা অাজকাল কেউ কেউ বলে থাকেন। তারা লোকহিতৈষী, তাদের কাছে সঙ্গীতটা লক্ষ্য নয়, উপলক্ষ্য । ধৰ্ম্মোপদেষ্ট যখন মুক্তির কথা বলেন তখন তিনি বন্ধন ছেদনের পরামর্শ দেন— কিন্তু কাব্যে বন্ধনকেই অবন্ধিত করে— রূপকে ত্যাগ করে না, তার অরূপতাকে উদ্ভাবিত করে । সুন্দরের বাশির মুরে টানে বিশ্বের দিকে, কিন্তু টেনে বাধে না— টেনে নিয়ে চলে অসীমে, ক্ষণিকের দীনতা থেকে অনিৰ্ব্বচনীয়ের পূর্ণতায় । তখন অপরূপকে ভালোবাসি, নিজেকেই ভালবাসবার নাগপাশ থেকে পরিত্রাণ পাই । S 84