পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তার এত বেশি ভাবাকুলতা । বাঙালী অত্যন্ত বেশি মেয়েলি । তার মানসক্ষেত্রের এই অতিরিক্ত আৰ্দ্ৰতা যদি না ঘোচে তাহলে সে ভাবোন্দ্বেগে মরীয়া হতে পারবে কিন্তু কিছুই সৃষ্টি করতে পারবে না । একদিকে তার অাছে কোনো একটা সঙ্কীর্ণ কেন্দ্রকে ঘিরে ভাবাবিষ্ট অন্ধ আত্মনিবেদন, আর একদিকে নিজের চক্রের বাইরে ঈর্ষা বিদ্বেষ কলহপরতা। কী জানি আমার প্রকৃতির কাছে এই মাতামাতি, এই হৃদয়াবেগে আবৰ্ত্তিত বিচিত্র নিরর্থকতা একান্ত অরুচিকর। অন্তত পুরুষের পক্ষে এটা একান্ত অমৰ্য্যাদাকর এবং দেশের পক্ষে এটা সাংঘাতিক দুৰ্ব্বলতাজনক বলে মনে হয় । ভারতবর্ষে একরকম সন্ন্যাসী আছে যারা শুষ্কতার মরুভূমির মধ্যে নিরুদেশ, আর একরকম ভক্ত বৈরাগী আছে যারা সিক্ততার তারল্যের মধ্যে আপাদমস্তক নিমজ্জিত । এদের কাছে যারা দীক্ষা নিচে মানুষের বিধাতা তাদের হারালেন । তবে তারা মানুষের ঘরে জন্মালো কেন ? মানুষের কাছে জ্ঞানে ভাবে ভোগে তাদের যে অপরিসীম ঋণ তার কী শোধ করলে ? আমি তো বলি, থাক ভক্তি থাক পূজা, মানুষের সেবায় দেবতার যথার্থ প্রসন্নতা যেন লাভ করি । আমার এমনি স্বভাব যে প্রথম থেকেই তোমাকে কেবল পীড়া দিচ্চি । ধৰ্ম্মকে অবলম্বন করে রসসম্ভোগ করাকেই তুমি যদি চরম শ্লাঘনীয় না বলতে তাহলে আমি চুপ করে থাকতুম । কিন্তু তুমি যে তোমার পূজার উপলক্ষ্য করে আমার মানবদেবতাকে উপেক্ষা করতে চাও, তার মধ্যে কাল্পনিক অশুচিত মূঢ়ভাবে আরোপ করে তাকে অবমানিত করতে চাও সে আমি ) ( సె