পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই নিয়ে খেলাচ্ছলে একরকম আরাম পায়— তাদের কোনো নালিষ নেই । তোমার হৃদয় মনকে অত সহজে শিকল পরিয়ে তুমি দমিয়ে রাখতে পারচ না, তাই কষ্ট পাচ্চ । তোমার এই সঙ্কীর্ণ অবস্থায় থেকেও তুমি মুক্তির আস্বাদ পেতে পারতে যথেষ্ট পড়াশোনায়, এবং রচনার মধ্যে । বহির্জগতের স্বাধীনতা, যা তোমার নিজের ছেলের আছে, তা তোমার নেই,— মানুষের এই মস্ত অধিকার থেকে তুমি বঞ্চিত । কাজেই অন্তর্জগতের মধ্যে সঞ্চরণের স্থান প্রশস্ত করা ছাড়া আর তো কোনো উপায় নেই । নিজের মধ্যে সৃষ্টি করে সেটাকে সত্য করে তুলতে পারে যদি তবে তাতেই পাবে আনন্দ । নইলে খাচার শলাগুলোতে কেবলি ডানা ঝাপটা মেরে কী লাভ । —আমার কথা যদি বলো, সংসারে আমার দুঃখ শোক অভাব অতৃপ্তি কম নয়— কিন্তু জগতে চারদিক থেকে আমি খোরাক সংগ্রহের রাস্তা রেখেছি, অামার চিত্তের ঔৎস্থক্য কোনোদিকেই বাধাগ্রস্ত হয় নি – তুমি একটি বিশেষ পথ দিয়ে হৃদয়ের চর্চা করেছ —সেই পথটিই তোমার পক্ষে সহজ । সেই পথে তোমার প্রধান আশ্রয়কে হারিয়েচ । অন্য পথ তোমার অনভ্যস্ত, তুর্গম, হয়তো বা তোমার স্বভাববিরুদ্ধ । তাই মনে হয় যে সব বৈষ্ণবশাস্ত্রে তোমার মন রস পেতে পারে তার মধ্যে একান্তভাবে মগ্ন হতে পার কি ? বারবার বলেচি গুরুর পদ অামার নয় । আমি কবি, নানাভাবে নানা দিকে আমার মন সঞ্চরণ করে— অামার স্বভাবের বৈচিত্র্যবশত নিজেকেও নিজে বুঝি নে, অন্যেও እ ግ >