পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আছে। ঠাকুরঘরে যে মূৰ্ত্তি প্রতিদিন এই চোরাই মাল গ্রহণ করে সে তো সমস্ত বিশ্বকে ফাকি দিলে— মূঢ়তার ঝুলির মধ্যে ঢেকে তার চুরি। কত মানুষকেই বঞ্চিত করে তবে আমরা এই দেবতার খেলা খেলি । ঠাকুরঘরের নৈবেছের মধ্যে আমরা ঠাকুরের সত্যকার প্রাপ্যকে প্রত্যহ নষ্ট করি । এর থেকে একটা কথা বুঝতে পারবে, আমার দেবতা মানুষের বাইরে নেই। নির্বিবকার নিরঞ্জনের অবমাননা হচ্চে বলে আমি ঠাকুরঘর থেকে দূরে থাকি এ কথা সত্য নয়— মানুষ বঞ্চিত হচ্চে বলেই আমার নালিষ । যে সেবা যে প্রীতি মানুষের মধ্যে সত্য করে তোলবার সাধনাই হচ্চে ধৰ্ম্মসাধনা তাকে আমরা খেলার মধ্যে ফাকি দিয়ে মেটাবার চেষ্টায় প্রভূত অপব্যয় ঘটাচ্চি । এই জন্যেই আমাদের দেশে ধাৰ্ম্মিকতার দ্বারা মানুষ এত অত্যন্ত অবজ্ঞাত । মানুষের রোগ তাপ উপবাস মিট্‌তে চায় না, কেননা এই চিরশিশুর দেশে খেলার রাস্তা দিয়ে সেটা মেটাবার ভার নিয়েচি । মাত্রার মন্দিরে যখন লক্ষ লক্ষ টাকার গহনা আমাকে সগৌরবে দেখানে হোলো তখন লজ্জায় তুঃখে আমার মাথা হেঁট হয়ে গেল। কত লক্ষ লক্ষ লোকের দৈন্য অজ্ঞান অস্বাস্থ্য ঐ সব গহনার মধ্যে পুঞ্জীভূত হয়ে আছে। খেলার দেবতা এই সব সোনা জহরাৎকে ব্যর্থ করে বসে থাকুন— এ দিকে সত্যকার দেবতা সত্যকার মানুষের কঙ্কালশীর্ণ হাতের মুষ্টি প্রসারিত করে ঐ মন্দিরের বাহিরে পথে পথে ফিরচেন। তবু আমাকে বলবে আমি নিরঞ্জনের পূজারি ? ঐ ঠাকুরঘরের মধ্যে যে পূজা পড়চে সমস্ত ক্ষুধিতের ক্ষুধাকে অবজ্ঞা 8