পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপদ। তা ছাড়া যে সত্য সকল জীবের মধ্যে তাকে অজীবের মধ্যে দেখতে চেষ্টা করা আর শাখার ফুলকে শিকড়ে খুজে বেড়ানো একই কথা। তুমি তোমার যে-গুরুর মধ্যে পূর্ণ মানুষকে উপলব্ধি করেচ তিনি তো ফাকি নন, তাকে পেতে হলে তোমার সমস্ত মানবধৰ্ম্ম দিয়ে পেতে হবে, ছেলেখেলা করে হবে না। বিরাট মানুষকে আমরা কোনো মানুষের মধ্যে দেখেচি তার সত্য প্রমাণ দেওয়া চাই যে— কী নৈবেদ্য র্তাকে দিলে ? কেবল হৃদয়াবেগ ? তাকে উদ্দেশ করে তুমি মানুষের জন্তে কি করেচ— আপনাকে কতখানি বিশুদ্ধ করে তুলতে পেরেচ ? তুমি যে মানুষকে সমস্ত মন দিয়ে উপলব্ধি করেচ তিনি কি প্রতীক ? মস্তর পড়ে সারবে ? বিরাট যে তার মধ্যেই দেখা দিয়েচেন —কিন্তু সেই বিরাটের সেবা কোথায় ? তুমি তৃপ্তি পাচ্চ না আজ, তার মানে তুমি তাকে ব্যবহার করতে চাচ্চ আপনার তৃপ্তির জন্তে— তার তৃপ্তির জন্তে যখন আপনাকে সত্যভাবে ত্যাগ করবে, মানুষের দ্বারে, স্মৃতিমন্দিরের প্রাঙ্গণে নয়, তখনই জীবনে র্তার সঙ্গে তোমার মিলন সার্থক হবে । আমার সময় বড়ো কম। আমাকে অনেকে বাজে চিঠি লেখে —তার উত্তর দিতে গেলে আমার সময়ের অপব্যয় হয়। তুমি তোমার সত্য প্রয়োজনেই আমাকে লিখেচ বলেই আমি তোমাকে ভালো করে বুঝিয়ে লিখতে কৃপণতা করি নে। তা ছাড়া তুমি লিখতে জানো তাই লেখা আদায় করা তোমার পক্ষে সহজ । শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর