পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কল্পনা করেছিলেন, সেটা র্তার ভুল হতে পারে কিন্তু মহত্ত্বকে ভক্তি করা অহৈতুক, সেটা বিশুদ্ধ ভক্তি। কিন্তু তোমাদের যে সব মেয়েরা স্বৰ্গফলের লোভে ঘটা করে দেবতার পূজো দেন এবং সেই ফলকে সমাপ্তি দেবার জন্যে পাণ্ডার পা দেন মোহরে ঢেকে তাদের এই মনোবৃত্তিকে যদি ভক্তি নাম দাও, তাহলে বৈষয়িক ফৌজদারী মকদ্দমার অনুকূলে দারোগাকে যে ঘুষ দেওয়া হয় সেও তো ভক্তি বলে গণ্য হতে পারে। এমনতরো বিকৃতিকেও তোমরা ভক্তি নাম দিতে পারে। সে অামাদের দেশের অাবহাওয়ারই দোষে । এই মনোভাবের থেকেই তোমাদের পণ্ডিত তর্ক করেন যে শ্ৰীকৃষ্ণ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে যখন অক্ষৌহিণী সৈন্ত নাশ করতে পেরেছেন তখন পূজা উপলক্ষ্যে শত সহস্ৰ পাঠ মহিষ বলি দিতে কুষ্ঠিত হবার কারণ নেই। “বিনাশায় চ তুস্কৃতাং” ভগবানকে বারে বারে জন্ম নিতে হয় এই কথা গীতায় আছে । ধৰ্ম্মযুদ্ধে অনিবাৰ্য্য নিধনকাৰ্য্য নিরাসক্ত মনেই করা যেতে পারে কিন্তু দেবী যে প্রত্যহ পাঠার রক্ত পান করে থাকেন তারা কি তুস্কৃতের দলে— যারা তাদের বধ করে তাদের চেয়েও কি তারা তুস্কৃত। মহাভারতের বকাসুর রোজ একটা করে মানুষ খেত— ভারতের পূজামন্দিরে দেবীও মহামাংসনৈবেদ্যকে সব চেয়ে শ্রেষ্ঠ নৈবেদ্য বলে গ্রহণ করেছেন তার প্রমাণ আছে, উক্ত অসুরের লোভের সঙ্গে এই লোভের প্রভেদ কি ? পাঠার রক্তলোভও সেই জাতেরই। পুরাণ কাহিনীতে আছে চণ্ডী কোনো এক যুগে মহিষ নামধারী দানবকে বধ করেছিলেন— দানব যদি তুষ্টস্বভাব হয় তবে দেবী ভালোই ২৭৩