পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করেন। সনাতনীদের ধৰ্ম্মই ভারতীয় সমাজকে চিরবিচ্ছিন্ন করবার পস্থা আশ্রয় করেছে— এই কারণেই র্যারা রাষ্ট্রনীতিক্ষেত্রে সফলতা লাভ করতে ইচ্ছা করেন তাদের সঙ্গে সনাতনীদের মত ও আচারের মিল না থাকাই সম্ভব— কিন্তু তাই বলে কনগ্রেসের কার্য্যবিধির মধ্যে বিশেষ করে সনাতনীদেরই ঠেকিয়ে রাখা হয়েচে এমন অপবাদ আমি তো আর কখনো শুনি নি। সমস্ত পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র ভারতবর্ষেই ভগবানকে পূজার ক্ষেত্রে জাতের বেড়ায় বিভক্ত করা হয়েছে— অর্থাৎ যেখানে শত্রুরাও মেলবার অধিকার রাখে হিন্দুরা সেখানেও মিলতে পারে না । এই মৰ্ম্মান্তিক বিচ্ছেদে হিন্দুরা পদে পদে পরাভূত। তারা সৰ্ব্বজনের ঈশ্বরকে খৰ্ব্ব করে নিজেদেরই পঙ্গু করেছে— তাদের এই নিত্যধৰ্ম্মবিরোধী আত্মঘাতী আচরণকে দেশের হিতাকাজক্ষীরা কখনোই শ্রেয় বলে স্বীকার করতে পারে না । বাংলাদেশে আজ যে মুসলমানের সংখ্যা এত অত্যন্ত বেশি, তার কারণ ঘটিয়েছে সনাতনীরা, আমি যখন জমিদারী পরিদর্শনে মফস্বলে যেতম প্রতিদিন তার প্রমাণ পেয়েছি । মানুষকে হিন্দুসমাজ অবমাননার দ্বারা দূর করে দিয়েছে, সকলের চেয়ে লজ্জার বিষয় এই যে সেই অবমাননা ধৰ্ম্মের নামেই । সনাতনীর নিত্যধৰ্ম্মবিদ্রোহী বলেই দেশবিদ্রোহী। মুসলমানের কাছে একদিন তারা হেরেছে আবার হারবে । মুসলমানের অণর যত দোষ থাক তারা ঈশ্বরকে খণ্ডিত করে নি, তাদের ধৰ্ম্মের বিধানেই তাদের ঐক্য । আমাদের ধৰ্ম্মের বিধানেই আমাদের অনৈক্য। এই অনৈক্যের ফাটল দিয়েই বহুশতাব্দী ধরে আমাদের ৩২২