পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গেছে, সেই জন্তে আমি স্বয়ং সশরীরে অনুপস্থিত থাকলেও আমাকে কোনো উপলক্ষ্যে জনতার মধ্যে আলোচনার বিষয় করলে কুষ্ঠিত হই । বোধ হয় আর একটা কারণ এই যে এ রকম অনুষ্ঠানকে অনেকখানি অবাস্তব দিয়ে পূর্ণ করতে হয় । আমাকে শ্রদ্ধা র্যারা করেন তাদের সংখ্যা পরিমিত, যারা করেন না বহুল পরিমাণে র্তাদের দিয়ে সভা ভরাট করতে না পারলে অাসর জমে না । বয়স আমার ৭৩ পেরোলো। এত দিন ধরে বাহির থেকে নিজের সম্বন্ধে ভালো মন্দ অনেক শুনেচি– নিজের মধ্যেও ভালো মন্দর দ্বন্দ্ব যথেষ্ট আছে । বয়স যখন অল্প ছিল তখন স্বভাবতই নিজের সম্বন্ধে একটা ঔৎসুক্য ছিল, এখন ক্লাস্তি এসেচে, এখন নিজেকে নিয়ে তোলাপাড়া করতে আর ভালো লাগে না— এখন চুপচাপ করে ছায়ালোকখচিত তরুবীথিকায় মৃন্ময়ী পৃথিবীর আতিথ্য ভোগ করতে ইচ্ছে করে । আমি কবি কি অকবি ভালোলোক কি মন্দলোক কী হবে সেই বিচার বিতর্কের উত্তেজনায়— নানা ভুলের মধ্যে ভালোব মধ্যে দিয়ে আমার কাজ তো শেষ করেছি— এখন চললুম নেপথ্যে— হাততালির শব্দটা অনাবশ্বক বোধ হয়। কৰ্ম্মের শেষ দণ্ড পুরস্কার দেবে ভাবকাল, তখন তো উপস্থিত থাকবো না— তার পূৰ্ব্বে থেকেই যত দূর সম্ভব নিরাসক্ত হতে পারাই ভালো । আমার কাজের মধ্যে যেটুকু অংশ মহাকাল দক্ষিণ হাতে তুলে নেবেন সে র্তারি মরজি, তা নিয়ে আমার আর কোনো কৰ্ত্তব্য নেই, ভিড়ের লোকের নিন্দ প্রশংসারই বা মূল্য কতটুকু ? বেঁচে থাকতে যে কয়জনের ৩৯২