পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেয়। এটা অত্যক্তি হবে যদি বলি কোনো বাধা মতে আমাকে পেয়ে বসে না— কিন্তু সে সব বাধনের গ্রন্থি আলগা— যখন টান পড়ে তখন আপনিই খোলে, গলায় ফাস লাগায় না । এত করে তোমাকে এ সব কথা বলচি তার কারণ এই, যে, তুমি মনে করেচ আমি তোমার চিত্তকে আশ্রয় দিতেও পারি। কিন্তু আমার মনে হয়, যে অন্নে তোমার অভ্যাস সে অন্ন আমার ঘরে নেই– তুমি আমাকে যে ভাবে কল্পনা করচ আমি হয় তো সে ভাবের মানুষ নই— আমাকে কাছে দেখলে সে কথাটা ধরা পড়ে হয় তো তুমি কষ্ট পাবে। তুমি লিখেচ আমার সম্বন্ধে এক সময়ে তোমার এবং তোমাদের অনেকের একটা বিরুদ্ধতা ছিল । এই বিরুদ্ধতা প্রচ্ছন্ন ও প্রকাশ্যভাবে আমার দেশের ভিতরেই আছে। অামার স্বভাব দেশের প্রচলিত ধারার সঙ্গে ছন্দ মেলাতে পারে নি । যাদের আমি বন্ধুভাবে গণ্য করেছি, হঠাৎ দেখি আমার সম্বন্ধে তাদের প্রতিকূলতা নিদারুণভাবে তীব্র হয়ে উঠেচে। বুঝতে পারি অামি যেখানকার লোক সেখানকার সঙ্গে আমি বেখাপ | এক জায়গায় এরা আমার কাছাকাছি এসে হু চট খেয়ে পড়ে— সেটা আমার স্বভাবের দোষে না তাদের চলনের ক্রটিতে সে তর্ক করে কোনো লাভ নেই— এবং তর্কে জিতলেও কোনো সান্তনা নেই । বাল্যকাল থেকে তুমি যে সব বাংলা বই পড়েচ তোমার চিত্ত এবং রুচি যে সাহিত্যরসে সাড়া দিতে অভ্যস্ত তোমার চিঠিতে তারও বিবরণ দেখলুম। তুমি নিশ্চয় এটা দেখেচ