পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীশ্ৰীহরি ভরসা— শ্ৰীচরণেষু— দাদা, আপনি ভেবেছেন, আমি বিরক্ত হয়েছি, এটা সম্ভব ? ঠাটা করি বলে’, চঞ্চলতা ও দুষ্টুমি করি বলে’, আপনার উপর বিরক্ত হতে পারি ?... আপনি জানবেন, আপনার সঙ্গে যে তর্ক করি, সে আপনাকে হারাবার দুরাশায় নয়, সত্য আবিষ্কারের জন্য । আমার গ্রহে দৃঢ় বিশ্বাস আছে। ভক্তি করার কথা হচ্ছে না। আমি বিশ্বাস করি না যে নবগ্রহস্তোত্র পড়লেই গ্রহের গতি ফিরবে। কারণ, আমার মতে গ্রহ প্রাকৃতিক শক্তি, গ্রহের দেবতা থাকেন তো থাকুন, যেমন রাগ রাগিণীর দেবতা আছেন । সরস্বতীপুজার বেলায় তাদের পূজা হয় কিনা, জানি না । আমরা কেউ রাগ রাগিণীর পুজা করি না এটা সত্যি । তেমনি গ্রহও হয়ত কোনো কারণে কারো কারো পুজনীয় হতে পারেন, আমি নিজে সে পুজায় দীক্ষিত হইনি। আমার মতে চন্দ্ৰস্থৰ্য্য যেমন প্রত্যক্ষ, বাকিগুলিও তাই । পুর্ণিমা অমাবস্যার ভরণের মতন সব গ্রহের শক্তিই এই পৃথিবীতে কাজ করে। রাষ্ট্রিক, সামাজিক, প্রাদেশিক, ব্যক্তিগত, সৰ্ব্বপ্রকার দৃষ্টিই গ্রহের আছে। গ্রহসংস্থান দ্বারা ম্যালেরিয়া দূর হবে কিনা তারও বিচার হয়। ঝড়বৃষ্টি, ভূমিকম্প, যুদ্ধবিগ্রহ, আকস্মিক দুর্ঘটনার বিচারও হয় । আপনি পরীক্ষা করে? দেখুন, এইমাত্র আমার নিবেদন । আপনি ভক্তি না করুন, ভক্তি চাই না । পুরুষকার দ্বারা গ্রহখণ্ডন হয় কিনা, জানি না। আমার মতে হয় না । যার কোষ্ঠীতে ঐ খণ্ডনের ব্যাপারও আছে অন্য গ্রহের যোগে, তারই গ্রহখণ্ডন হয়, অন্যের হয় না। বিশ্ববিধাতা আমাদের কার্য্যপ্রণালী নিৰ্দ্ধারিত করে দিয়েছেন, জন্মের ষষ্ঠ দিনে নয়, মাতৃগর্ভে আসবার সঙ্গে সঙ্গেই । সেইটেই স্বব্যক্ত হয় ভূমিষ্ঠকালে । গ্রহ যেন 8曲°C