পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একান্ত নির্ভর করার অভ্যাসেই আমাদের সাংঘাতিক ফাকি দেয়, যা হারায় বা না পাওয়া যায় সে ফাকির মধ্যে প্রবঞ্চনা নেই,— সেটার উপলক্ষ্য সংসারে পদে পদেই ঘটে তবু তাকে সহজে গ্রহণ করবার শিক্ষাটা কিছুতেই পাকা হতে চায় না। যেখানে আপিল খাটে না সেখানে নালিশ করার মতো অপব্যয় কিছুই নেই। অন্তরের মধ্যে একটা ক্ষতিপূরণের ভাণ্ডার আছে— কিন্তু আমরা সেই ভাণ্ডারের কুলুপে মরচে ধরিয়ে ফেলি তাই সাস্তুনার সম্পদকে অস্তরে আবদ্ধ রেখে তাকে পাই নে। অামাদের উৎস আছে তার মুখে পাথর চাপানে, ডোবা আছে তার জল পদে পদে শুকিয়ে যায়– সংসারের নিষ্ঠুরতা বারবার কঠোর কণ্ঠে এই কথাই বলে, ঐ পাথরটাকে ঠেলে সরিয়ে দাও । বাহিরটা বিশ্বাসঘাতক, তাকে জোরে আশ্রয় করতে গেলেই আশ্রয় ভাঙে— সেই ভাঙনেই যদি অন্তরের পথ দেখিয়ে না দেয় তবে দুদিক থেকেই ঠকতে হয়। আমার মুখে উপদেশ শুনে মনে কোরো না যে আমিই বুঝি বাহিরের মর্ত্যলোক ডিঙিয়ে অস্তরের অমরাবতীতে গিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। যখন সংসার থেকে তাড়া খাই তখন সংসার পেরোবার রাস্ত সাফ করতে লেগে যাই— ফাড় কেটে গেলে আবার কুঁড়েমিও ধরে। অতএব উপদেষ্টাকে অযথা ভক্তি করবার কারণ নেই। সৰ্ব্বাস্তঃকরণে তোমাকে আশীৰ্ব্বাদ করি । ইতি ২৪ জ্যৈষ্ঠ শুভাকাঙ্ক্ষী سرارعا(ع) لا শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর \Ob