পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সনাতন কৌলীন্ত ? মহাভারত পড়েছ ত— পৌরাণিক যুগের আচার আচমনে উপবাসে বুকের হাড় বের করা পুরাতন ভারতের সঙ্গে কোনখানে তার মিল ? যে পুরাতন ভারত চিরন্তন ভারত আমি তাকেই প্রণাম করে মেনে নিয়েছি, তার বাইরে যাই নি। আমার জীবনের মহামন্ত্র পেয়েছি উপনিষদ থেকে, যেউপনিষদকে একদা বাংলাদেশের বেদ-বৰ্জিত নৈয়ায়িক পণ্ডিতের বলেছিল রামমোহন রায়ের জাল-করা,— যে উপনিষদ মানুষের আত্মার মধ্যেই পরমাত্মার সন্ধান পেয়েছিলেন, যে উপনিষদের অনুপ্রেরণায় বুদ্ধদেব বলে গিয়েছেন জীবের প্রতি অপরিমেয় প্রীতিই ব্রহ্মবিহার, সেই পরম চরিতার্থতা দেউলে দরোগায় নয়, পাণ্ডাপুরোহিতের পদসেবায় নয়। যে-যুরোপ জ্ঞানকে সংস্কারমুক্ত করে কৰ্ম্মকে বিশ্বসেবার অনুকূল করেছে সেই যুরোপ উপনিষদের মন্ত্রশিষ্য জামুক বা না জানুক। যে-যুরোপ শক্তিপূজার বীভৎস আয়োজনে বিজ্ঞানের খপরে নররক্তের অর্থ্য রচনা করচে সেই যুরোপ পৌরাণিক— সেই যুরোপ জানে না বাহিরের যন্ত্র মনের দৈন্ত তাড়াতে পারে না, যন্ত্রযোগে শাস্তি গড়বার চেষ্টা বিড়ম্বনা । আমরাও যেমন অন্তরের পাপকে বাহিরের অনুষ্ঠানে বিশুদ্ধ করতে চেয়েছি— তারাও তেমনি অস্তরের অকৃতাৰ্থতাকে বাহিরের আয়োজনে পূর্ণ করবার তুরাশা রাখে, এইখানেই যাকে আমরা পুরাতন ভারত বলি তার সঙ্গে এদের মেলে। মেলে না সেই উপনিষদের সঙ্গে যিনি বলেচেন, এষ দেবো বিশ্বকৰ্ম্ম মহাত্মা সদা জনানাং হৃদয়ে সন্নিবিষ্টঃ, 8やり