পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●》 ২৭ জুলাই ১৯৩১ কল্যাণীয়াসু আমার সাধনা সম্বন্ধে তোমার সুন্দর ভাষায় যা লিখেচ সেটি সত্য। মানবের পরিপূর্ণতার শাশ্বত আদর্শ শাশ্বত মানবের মধ্যে আছে,— যে অংশে সেই পরিপূর্ণতা আমরা লাভ করি সেই অংশে সেই পরিপূর্ণের সঙ্গে আমাদের মিলন হয়। সেই মিলনে এত গভীর আনন্দ যে তার জন্তে মানুষ প্রাণ দিতে পারে। এমনি করেই যুগে যুগে কত সাধকের ত্যাগের উপরেই মানবসভ্যতা প্রশস্ততর প্রতিষ্ঠা লাভ করচে। পূর্ণ মানুষের ডাক না শুনতে পেলে মানুষ বর্বরতার অন্ধকূপে চিরদিনই পশুর মতো পড়ে থাকত। আজো অনেক বধির আছে, কিন্তু যাদের মৰ্ম্মের মধ্যে পূর্ণের বাণী প্রবেশ করে এমন অল্পসংখ্যক লোকও যদি থাকে তাহলেই যথেষ্ট । বস্তুত তারাই অতি কঠিন বাধার ভিতর দিয়ে মানুষকে এগিয়ে নিয়ে চলেচে । অাদিকাল থেকে আজ পর্য্যস্ত মানুষের সমস্ত ইতিহাসই হচ্চে সেই অভিসার । নক্ষত্রের আলোকে অন্ধকার রাত্রের এই অভিসারে মানুষ বারেবারেই পথ হারিয়েছে, পিছিয়ে গেছে, কিন্তু এ কথাটা কখনোই সে ভুলতে পারে নি যে তাকে চলতেই হবে, যেখানে আছে সেইখানেই তার চরম আশ্রয় এমন কথা বললেই মানুষ মরে— এমন কি, যখন সে পিছিয়ে চলে তখনো চলার উপরে তার শ্রদ্ধা প্রকাশ পায় । ৭২