পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওঠে, তাকে গায়ে মাথায় মাখলেই সেটা অশুচি হয়ে পড়ে। যারা প্রচারে উৎসাহী তারা কোনোমতে ভিতরের জিনিষকে বাইরে চাপিয়ে দিয়ে খুসি হয়— এই জন্যে তারা দল গড়ে তোলে মন গড়ে তোলে না । যারা স্বভাবতই দলচর লোক তারাও দলের চাপরাস পরে সগৰ্ব্বে খুসি হয়ে বেড়ায় । সকল ধৰ্ম্মসমাজেই দলের অত্যাচার আছে। কেননা, অধিকাংশ লোকেরই অস্তরের আবরণ শেষ পর্য্যন্ত খোলে না। এই কারণে তারা বাইরের দিক থেকে চালিত হবার ঔৎসুক্যে বাহ্যিকতাকেই চিরদিনের মতো আকড়ে ধরে এবং তারাই এই বাহ্যিকতার জবরদস্তি নিয়ে অন্তের উপর অত্যাচার করতে ছাড়ে না। ধৰ্ম্মের নামে যত উন্মত্তত যত রক্তপাত সে তো এই বাহ্যিককে নিয়েই । ধৰ্ম্মের অভিমান এই নিয়েই, মূঢ়তা এইখানে । তোমার চিঠি পড়ে এ কথা বুঝি যে, একটি আন্তরিক উপলব্ধি সোনার কাঠির মতো তোমার চিত্তকে জাগিয়েছে। সব সময়েই তার স্পর্শ পাও বা না পাও একবার পেলেই তার সম্বন্ধে আর সংশয় থাকে না। এর উপরে বাইরে থেকে তর্ক একেবারেই মিথ্যে । তুমি প্রদীপ দেখেচ কি না তা নিয়ে নানা সাক্ষীসাবুদ নিয়ে তোমার সঙ্গে বচসা করা চলে কিন্তু যখন তুমি বলে আমি আলো দেখলুম তখন সেই আলোর সাক্ষী তুমি নিজেই। সেই আলো আমিও যদি দেখে থাকি তাহলে তোমার সঙ্গে প্রদীপের ঝগড়াটা থামিয়ে দেওয়াই ভালো, কেননা সেটা সামান্ত কথা । একটা জায়গায় আমাকে তুমি সম্পূর্ণ বোঝনি। বারবার আশঙ্কা প্রকাশ করেচ পাছে আমার কথা মানতে পারচ না বলে