পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 o চিঠিপত্র ব্যাপারটা ভিতরে ভিতরে বিরহীর আকাঙ্ক্ষায় পরিপূর্ণ। বিরহাবস্থার মধ্যে একটা বন্দীভাব আছে কিনা— এই জন্তে বাধাহীন আকাশের মধ্যে মেঘের স্বাধীন গতি দেখে অভিশাপগ্রস্ত যক্ষ আপনার তুরস্ত আকাজক্ষাকে তারি উপরে আরোপণ করে বিচিত্র নদী পৰ্ব্বত বন গ্রাম নগরীর উপর দিয়ে আপনার অপার স্বাধীনতার মুখ উপভোগ কৰ্ত্তে কৰ্ত্তে ভেসে চলেছে। মেঘদূত কাব্যটা সেই বন্দীহৃদয়ের বিশ্বভ্রমণ । অবশ্য, নিরুদ্দেশ্য ভ্রমণ নয়— সমস্ত ভ্রমণের শেষে বহুদূরে একটি আকাজক্ষার ধন আছে— সেইখানে চরম বিশ্রাম— সেই একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য দূরে না থাকলে এই লক্ষ্যহীন ভ্রমণ অত্যন্ত শ্রান্তি ও ঔদাস্তের কারণ হত । কিন্তু সেখানে যাবার তাড়াতাড়ি নেই— রয়ে বসে আপনার স্বাধীনতামুখ সম্পূর্ণ উপভোগ করে, পথিমধ্যস্থিত বিচিত্র সৌন্দর্য্যের কোনটিকেই অনাদরে উল্লঙ্ঘন না করে রীতিমত Oriental রাজমাহাত্ম্যে যাওয়া যাচ্চে । যক্ষের দিক থেকে দেখতে গেলে সেট হয়ত ঠিক “ড্রামাটিক” হয় না— একটা দক্ষিণে ঝড় উঠিয়ে একেবারে হুস করে সেখানে গিয়ে পড়লেই বোধ হয় তার পক্ষে ঠিক হত কিন্তু তাহলে পাঠকদের অবস্থা কি হত বল দেখি ? আমরা এই বর্ষার দিনে ঘরে বন্ধ হয়ে আছি— মনটা উদাস হয়ে আছে, আমাদের একবার মেঘের মত মহাস্বাধীনতা না দিলে অলকাপুরীর অতুল ঐশ্বৰ্য্যের বর্ণনা কি তেমন ভাল লাগত। আজ বর্ষার দিনে মনে হচ্ছে পৃথিবীর কাজকৰ্ম্ম সমস্ত রহিত