পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨8ર চিঠিপত্র লেখাও আমার আর চলচে না । এর থেকেই কথাটা নিশ্চয় উঠেচে। সত্যিই আমার কেমন লেখা সম্বন্ধে জড়তা এসেচে । বারে বারে এই কথাই কেবল মনে হয় আমাদের দেশের পাঠক লেখকদের উপর আজকাল অত্যন্ত বেশি মুরুবিবয়ান করে । আমাদের যখন বয়স অল্প ছিল বঙ্কিমবাবুদের প্রতি আমাদের মনের ভাব ঠিক উল্টে ছিল। এমনতর পাঠকসমাজের কাছে লিখতে কোনোমতেই গা লাগে না । এর ফল হয় এই যে, নিজের ভিতরে যতটা পূর্ণত আছে বাইরে তার প্রকাশের পথ অনেকটা অবরুদ্ধ হয়ে যায়। কেননা বাইরে থেকে আদায় করে নেবার ব্যবস্থা না থাকলে ইচ্ছ। থাকলেও দেওয়া যায় না— মন ত আমাদের সম্পূর্ণ নিজের বশ নয়— আমাদের নিজের যা সম্পদ অাছে তা দিতে গেলে ভিতর বাহিরের যোগে সেটা ঘটুতে পারে । এই সকল কারণে, এবং হয়ত অন্য নানা কারণও আছে, আমার কেবলি দূরে প্রালিয়ে যেতে ইচ্ছা করে। মনে মনে কেবলি জিনিসপত্র প্যাক্ করচি, এবং টাইম টেব ল দেখচি– এমন অবস্থায় মনটাকে কলমের ঘানিতে জুড়ে দেওয়া ভারি শক্ত হয়। আজকাল কবিতা লেখায় হাত দিয়েছিলুম, তারও দেখচি ইষ্টিম ফুরিয়ে আসচে। এই রকম মানসিক উড় ক্ষুত রোগের একমাত্র ওষুধ হচ্চে খুব ভরপুর বেগে একেবারে উড়ে যাওয়া । চেষ্টা ত করচি, কিন্তু আজকাল পথও চারদিকে বন্ধ, আবার পাথেয়ও তথৈবচ। সেইজন্য দিনরাত কেবল চলি-চলিই করচি অথচ চলা হচ্চে না,