পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SQさ চিঠিপত্র করেছি বহন করেছি। তারুণ্য নূতন নূতন কালে, নূতন নূতন রূপে, নূতন নূতন পুষ্পপল্লবে নিজেকে বার বার প্রকাশ করে। প্রাণের অক্ষয়বট যে অক্ষয় তার কারণ তার মজ্জার মধ্যে চিরতারুণ্যের রসধারা বইচে । তাই প্রতিবসন্তেই সে বারে বারে নূতনবেশে নবযুবক হয়ে দেখা দেয়। আমাদের দেশেও জীর্ণ বটের মজ্জার মধ্যে যদি যৌবনের রস একেবারেই না থাকৃত তাহলে এর দ্বারা দেশের চিতাকাষ্ঠই রচনা হত। কিন্তু এখানেও দেখি, মাঝে মাঝে যৌবন একটা আকস্মিক বিদ্রোহের মত কোথা হতে আবিভূত হয়ে কঠিন জরার প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করে । অামাদের সময়েও সে নির্ভয়ে এসেছে, নূতন কথা বলেচে, মার খেয়েছে, পুরাতন আপন চণ্ডীমণ্ডপে বসে তাকে একঘরে কবে দিয়েচে । সেদিন আমি সেই ঝোড়োদলের মধ্যেই ছিলুম। দল যে বাহিরে খুব বড় ছিল ত৷ নয়, কিন্তু অন্তরে তার বেগ ছিল। চণ্ডীমণ্ডপনিবাসীরা এখনো সেজন্তে আমাকে ক্ষমা করেনি। আমি তাদের ক্ষমার দাবীও করিনে, কেননা আমি জেনে শুনে ইচ্ছাপূৰ্ব্বক চণ্ডীমণ্ডপের শান্তিভঙ্গ করেছি, সেখানকার বৈকালিক নিদ্রার যতদূর ব্যাঘাত করবার তা করতে ক্রটি করিনি। অর্থাৎ বিকালের নিস্তব্ধ তন্দ্রা-লোকে সকালের চাঞ্চল্য সমীরিত করবার চেষ্টা করেচি । আমাদের কালের সেই চাঞ্চল্যসাধনাই তোমাদের কালের নূতন পাতায় বিকাশিত হয়ে নীলাকাশের উপুড়-পেয়াল থেকে সূৰ্য্যালোকের তেজোরস পান করবার চেষ্টা করচে ।