পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিঠিপত্র (? X জোরের তেমন বেশি দরকার বোধ করচি নে— গায়ের জোরটা হয় ত উৎপাত করতে পারত। তুই আমাকে বই পাঠিয়েছিস । অনেকদিন থেকে বই পড়া বন্ধ আছে। বই পড়ার হাত এড়াবার জন্তে ছেলেবেলায় রোগ কামনা করতুম কিন্তু এমনি তুর্জয় স্বাস্থ্য নিয়ে জন্মেছিলুম যে কিছুতেই অসুখ করতে চাইত না । তখন যমদূতেরাও বালকের বিরুদ্ধ পক্ষে যোগ দিয়েছিল। বালককালের সেই কামনা এতদিন পরে আজ সিদ্ধ হল । শরীরটা জবাব দিয়ে বসেছে— আমার ইস্কুল যাওয়া বন্ধ। চিঠি লিখিনে বই পড়িনে, সভাপতিটা বিদায় হয়ে গেছে। এবারকার জন্মদিনে বই আমার ঠিক উপহার নয়। এবারে ঘাটে-ফের নীেকোর পক্ষে তীরের থেকে শুধু উলুধ্বনিই যথেষ্ট হত। এ চিঠি থেকে হয়ত একটা কথা ভুল বুঝতেও পারিস্ । প্রভাতের সঙ্গে সায়াহ্নের যেমন একটা মিল আছে তেমনি একটা স্বাতন্ত্র্যও আছে। প্রভাতের নবীন আলোয় মধ্যাহ্নের বাণী নেই, কিন্তু সায়াহ্নের পূর্ণত গৃঢ়ভাবে মধ্যাহ্নকে নিয়ে। খেলাঘর থেকে খেলাঘরেই ফিরতে হবে কিন্তু মাঝখানের যাত্রাট মহামূল্য। পড়ে'-পাওয়া খেলার সঙ্গে পূর্ণ পরিচয় যদি চাই তবে তাকে খুজে পাওয়া চাই। খুজতে গিয়ে খেলাটা ভুললেই ক্লাস্তি। আশা করি আজ থেকে আমার খোজাও চলবে খেলাও চলবে, দুটো এক হয়ে যাবে। তোদের শরীর সুস্থ হোক, বর্ষাও নামুক তার পরে দুজনে একবার এখানে এসে দেখাশুনো করে যাস ।