পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড ১৯৪৫)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিঠিপত্র ఆమో অত্যন্ত পরিচিত বলেই আমার কাছে প্রত্যহ নূতন বলে ঠেকে —যেমন চিরাভ্যাসের আরামটি পাই তেমনি নিয়ত বিস্ময়ের একটি আনন্দ অামার মনকে সৰ্ব্বদা জাগিয়ে রেখে দেয় এমন আর কোথাও পাবনা মনে হয় । এখানকার প্রকৃতির সঙ্গে কেবল আমার চোখের দেখার সম্বন্ধ নয়, একে অামার জীবনের সাধনা দিয়ে পেয়েছি— সেইজন্তে এইখানে আমি সকল তীর্থের ফললাভ করি— সেইজন্তে এইখানেই পড়ে থাকি এবং পড়ে থেকেই আমার ভ্রমণের কাজ হয় । এখানে আমার অনেক ব্যাঘাত, অভাব এবং অসুবিধাও আছে, সে সমস্তই শিরোধার্য্য করে নিয়েছি । তোমার গদ্যপ্রবন্ধ সবগুলিই পড়েছি । তোমার কবিতার যে গুণ তোমার গদ্যেও তাই দেখি— কোথাও ফাক নেই এবং শৈথিল্য নেই, একেবারে ঠাসবুনানি । এ গুণটি কিন্তু প্রাচ্য নয়। আমাদের বেশে ভূষায় বাক্যে এবং চিন্তাতেও অনেকটা বাহুল্য থাকে— গরম দেশে অত্যন্ত নিরেটভাবে ঃসংযোগ করাটা হুঃখকর । কেননা এখানে কাজের তুলনায় অবকাশটা একটু প্রচুর না হলে আমরা বাচিনে । অতএব যখন সময়ের টানাটানি নেই তখন ভাব ও বাক্যসমাবেশের ঠাসাঠাসিটা আমাদের পক্ষে অনাবশুক । ওতে লেখকেরও সংযমের দরকার করে পাঠকেরও তাই— তাড়া থাকলে সেটা করা যায় কিন্তু যেখানে তাগিদ নেই সেখানে গয়ংগচ্ছ চালটাই মানুষ স্বভাবত পছন্দ করে । এই সকল কারণেই, তোমার গম্ভ রচনারীতির মধ্যে যে নৈপুণ্য আছে আমাদের দেশের ১২