পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড ১৯৪৫)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 চিঠিপত্র সংসার থেকে যখন কোনো সাড়া পাই, তখন দেখি আমার জন্মদিনের সেই তারটিতে মরচে পড়েনি, এখনো তাতে সুর বেজে ওঠে। 趣闻 তোর চিঠির পুনশ্চ প্রকরণে তুই মস্ত একটা প্রস্তাব করে পাঠিয়েছিস । প্রস্তাবটা ভাল তার সন্দেহ নেই, কিন্তু আমি এখন তিন-কুড়ি বছরের পরপারে, নিরতিশয় দূরঙ্গমিত হয়ে বসে আছি । এখন দেখেচি মনের ভিতরে একটা ক্লাস্তি এসেচে, সহজে কোন নূতন দায়িত্ব নিতে ইচ্ছে করে না । কিছুদিন আগে কতকগুলি ছেলেদের কবিতা লিখেছিলুম। লেখবার একমাত্র তাগিদ ছিল বয়স্ক লোকের দায়িত্ববোধের জীবনকে ক্ষণকালের জন্তে মন থেকে সরিয়ে দেবার ইচ্ছায় । খেলার জগতে শিশু হয়ে জন্মেছি এই ঘটনাটির মধ্যে অস্তিত্বের মূলসত্যটি আমাদের জীবনের ভূমিকারূপে লিখিত হয়েচে, এই কথাটি কিছুকাল থেকে বারবার আমি ভাবচি এবং শিশুর কবিতায় এক-রকম করে প্রকাশ করবার চেষ্টা করেচি । দায়িত্ববোধরূপ ব্যাধি মামুষের বয়স্কতাকে কড়া করে পাক৷ করে তোলে, সে অবস্থায় সে খেলাকে অবজ্ঞা করতে থাকে, এবং খেলার সঙ্গে কাজের চিরবিচ্ছেদ ঘটিয়ে দিয়ে কৰ্ত্তব্যসাধন করচে বলে গৌরব বোধ করে । জানে না সে যা বলে তাতে জগৎকৰ্ত্তার নিন্দ করা হয়, কেন না খেলা ছাড়া তার কোনো কাজ নেই– তার দায় নেই বলেই তিনি আনন্দময়। আজকাল আমার প্রায়ই সেদিনের কথা মনে পড়ে যখন র্তার সঙ্গে আমার মিল ছিল, যখন আমার কোনো দায় ছিল না। হাসিকান্না