পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাছে লিখলুম। বেলাদের বড় বোন থাকলে তার যে কর্তব্য হ’ত আমি সেই কর্তব্যগুলি আমার মনে করি । কিন্তু মনে করলে কি হবে, আমি স্বাধীন নই ক্ষমতা কিছুই নেই, যদি সামান্ত কাজেও আসি সেটা খুবই সুখের মনে করব । কাকীমার কাছে অনেক কারণে ঋণী ছিলুম সে সব ঋণ ইহজীবনে শোধ করতে পারব না। বিবি, তোমাকে কি লিখব বল, সারা দিন যত কথা মনে হয় সব লিখতে গেলে পাগল মনে করবে ! কাকীমার সবরকম চেহারা মনে দিনরাত ঘুরে বেড়াচ্ছে— শেষ যে চেহারা দেখে এসেছি মনে হচ্ছে ফিরে গিয়ে ঠিক তেমনি দেখব, সেই জন্যই যেন মনটা ফিরে যাবার জন্য ছট্‌ফট্‌ করছে । তার পরে রবিকাকার একটা বিষন্ন মুখের সঙ্গে সঙ্গে যা মনে পড়ে সেটা অসহ্য । আর কখনও দেখতে পাব না এটা কিছুতেই সহ্য হয় না। এতদিন তো আর একসঙ্গে থাকতুম না ? রোজ একখানা করে চিঠিও লিখতুম না, তবু একটা ভরসা থাকত কোন দিন আসবেন কলকাতায় দেখা হবে । যাকৃ ওসব কথা ভেবে কোন ফল নেই, তবু মন মানে না তাই থেকে থেকে বলি । সকলেরই জন্ম হ’লেই মৃত্যু আছে ; আপশোষ এই যাদের গেলে কোন হানি নেই তারাই পড়ে থাকে। এবারে আমার দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে মৃত্যুই আমাদের শেষ নয় আরও উচ্চতর স্থান আছে, সে স্থানের উপযুক্ত না হ’লে লোক এ সংসার থেকে বিদায় নিতে পারে না । সেই জন্তে বেছে বেছে লোক যায় তা নইলে কাকীমার জীবনের শেষ হবার সময় তো হয়নি ? এত শীগগির তার শেষ হবার কি কারণ ? আমার মনে হয় এ সংসারের সম্পূর্ণতা পেলে সেই অদৃশু লোকের উপযুক্ত হয়— সেই সম্পূর্ণতা তিনি খুব অল্প সময়ে পেয়েছেন— নূতন জীবন নিয়ে উচ্চতর লোকে চলে গেছেন । আমাদের সঙ্গে কোন সংস্রব আছে কিনা জানি না, কিন্তু আমার সর্বদাই মনে হয় যারা আগে গেছেন তারা আমাকে এবং আমার সব কায সর্বদাই দেখছেন, আমাদের দেখবার কোন উপায় নেই। আমার মৃত্যুর পরে তাদের দেখা পাব কিনা জানি না কারণ ) ) సె