পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আনো মিঠাই, ভাজে। শিঙাড়া, ভাজো নিমকি, কচুরি, তাও আবার কম হলে চলবে না, পাত্র বোঝাই প্রচুর হওয়া চাই । সরঞ্জাম না হলে জিনিস আসবে কোথা থেকে সে কথা বলে কে * , কবি আদশের টানে নানা সময়ে নানা ভাবে নিজেকে বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলতে মনে কোনো দ্বিধা রাখতেন না । আদর্শপ্রবণতা র্তাকে কোথায় কখন কোন সংকটে জড়িয়ে ফেলে, এ ভাবনা কবিপত্নীর মনে থাকত । কবি ও কবির পরিবার অভিন্ন ; কবি বিপন্ন হলে পরিবারটিরও বিপন্ন-হওয়া স্বাভাবিক । স্বামী-সন্তানের দেহমনের মুখস্বাচ্ছন্দ্যের দিকে লক্ষ রাখা পত্নী ও জননীর স্বাভাবিক ধর্ম । সকল জননী, পত্নীর মনে এই আদর্শ জাগ্রত । সংরক্ষণের পথেই এই আদর্শের গতি । পুরুষ ছড়ায়, নারী কুড়ায়, বাচায় । ঘরে বাইরে পুরুষ ও নারীর এই আদর্শ-দ্বন্দ্ব স্বষ্টিরহস্যের এক বিশেষ অধ্যায় । কবির মুখে ফেলো ফেলো ছাড়ো ছাড়ো’ শুনে কবিপত্নী বলতেন, ঘরকন্না ফেদে, সন্তান-সন্ততি নিয়ে সংসার করতে গেলে, এক কথায় ফকির সাজা চলে না। পতি-পত্নীর মধ্যে হৃদয়ের ব্যবধান থাকা সম্ভব নয় । একের ভাবে অন্তের যুক্ত হওয়া স্বাভাবিক । কবির ভাব কবিপত্নী অনুপ্রাণিত না হয়ে পারেন নাই । শিক্ষাব্রতী কবি আদর্শ শিক্ষালয় গঠনের যখন প্রবৃত্ত, কবির সহধর্মিণী তখন সহকমিণী হয়েছিলেন তার সে কাজে । ছাত্রদের জলখাবার তৈরির ভাব নিয়েছিলেন তিনি নিজের হাতে । স্নেহ দিয়ে গড়তে চেয়েছিলেন ছাত্রগুলিকে । বিদ্যালয় আরম্ভের একটি বৎসর শেষ না হতেই বিদ্যালয়ের জননী কবিপত্নীর আয়ু হল শেষ । কবির সংসার ভেঙে দিয়ে তিনি চলে গেলেন অকালে । মৃত্যুশয্যায় কবি নিজের হাতে র্তার যে শুশ্ৰুষা করেছিলেন তার ছাপটি মুদ্রিত হয়ে রয়েছে পরিবারের সকলের মনে আজও । Y 8 &