মেয়ে— তিনি কিছুই গুছিয়ে গাছিয়ে করেকর্ম্মে নিতে পারেন না— তিনি বেশ ঠাণ্ডা হয়ে চুপচাপ করে বসে থাকেন— বলেন, আমি পারিনে, আমার মাথায় কিছু আসে না। বিহারীবাবুর অনেকটা আমার মত ধাত আছে দেখ্লুম। তিনি সকল বিষয়েই ভারি ব্যস্ত এবং চিন্তিত হয়ে পড়েন। এই যে ক দিনের জন্যে পুরীতে যাচ্চেন, মানুষ সাত সমুদ্র তেরো নদীর পারে যেতে হলেও এত উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেনা। কেবল তিনি আমার মত খুঁতখুঁৎ খিট্খিট্ করেন না— সেটা তাঁর স্ত্রীর পক্ষে একটা মহা সুবিধে। সমস্ত খুব চুপচাপ প্রশান্ত ভাবে সহ্য করতে পারেন। এ রকম স্বামী আমার বোধ হয় পৃথিবীতে অতি দুর্লভ। বিহারীবাবু ভারি গৃহস্থ প্রকৃতির লোক— ছেলে পুলেদের খুব ভালবাসেন, আমার দেখ্তে বেশ লাগে। আমাদের এমন যত্ন করেন— ঠিক যেন ঘরের লোকের মত— খুব যে বেশি আদর দেখিয়ে ব্যস্ত করে তোলা তা নয়— আমরা আমাদের ঘরে সমস্ত দিন যা-খুসী তাই করতে সময় পাই। যে যত্নটুকু করেন বেশ সহজ স্বাভাবিকভাবে। কিচ্ছু বাড়াবাড়ি নেই। এমনকি বলুকেও অনেকটা বাগিয়ে আন্তে পেরেচেন— সে বেচারা যদিও এখনো ক্রমাগত মাথা নীচু করে লজ্জায় লাল হয়ে হয়ে গেল। খাওয়া দাওয়া ত একরকম বন্ধ করেচে। ওঁরা যা খেতে বলেন তাতেই মাথা নাড়ে। ভাগ্যি ওঁরা দুজনে মিলে অনেক পীড়াপীড়ী করেন তাই মুখে দুটি অন্ন ওঠে। নইলে এতদিনে শুকিয়ে যেত। পথের মধ্যে যদি দুদিন চিঠি লিখ্তে না পারি ত কিছু ভেবো
২৩