পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৩২

[মজঃফরপুর। ১৬ জুলাই ১৯০১]

ওঁ

ভাই ছুটি

 তোমার মেয়েকে জিজ্ঞাসা কোরো জামাইবাড়ি এসে আমি কি রকম সাজসজ্জায় মনোযোগ করেছি। ঢাকাই ধুতি চাদর ছাড়া আর কথা নেই। এখানকার লোকেরা জানে আমি শরতের শ্বশুর, বঙ্গদর্শনের সম্পাদক, ব্রাহ্মসমাজের কর্ত্তৃপক্ষ, জগদ্বিখ্যাত মাননীয় শ্রদ্ধাস্পদ রবি ঠাকুর, আমার বেশভূষা দেখে তাদের চক্ষু স্থির হয়ে গেছে। রোজ সন্ধ্যাবেলায় দলে দলে বাঙালিরা এই অদ্ভুত কৌতুক দেখবার জন্যে সমাগত হচ্চে— শরতের ঘরে আর জায়গা হয় না— মনে করচি ঢাকাইটা ছাড়তে হবে— নইলে লোকের আমদানি বন্ধ করা যাবে না। শরৎ ত ভীড় দেখে ভয় পেয়ে গেছে। তোমার কথা শুনে আমার এই দুর্গতি হল। তোমার বুদ্ধিতেই বেলার গয়না খোয়া গেছে। আমি তাই মনে স্থির করেছি তোমার বুদ্ধিতে আর চল্‌বনা— আমাদের হিন্দুশাস্ত্রেও লিখ্‌চে স্ত্রীবুদ্ধি প্রলয়ঙ্করী। বোধ হয় শাস্ত্রকারদের স্ত্রীরা স্বামীদের জোর করে ঢাকাই ধুতি পরাত।

 বেলা বোধ হচ্চে এখন বেশ স্থির হয়ে নিজের ঘরকন্নাটি জুড়ে নিয়ে বসেছে। গোছান গাছানর কাজে এখন ওর দিনকতক বেশ কাট্‌বে। ওর সেই সব শামুক শাঁখ প্রভৃতি বেরিয়েছে। যেখানে ওর বসবার ঘর স্থির হয়েছে সে ওর

৫৮